বাঞ্ছারামপুর বিএনপির সম্মেলন, পলাশ সভাপতি মুসা সম্পাদক
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১০ পিএম
টানটান উত্তেজনা, একাংশের নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা জারির মধ্য দিয়ে বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দুপুরে উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের রাধানগর মাদ্রাসা মাঠে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূইয়া।
সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর প্রধান অতিথি থাকার কথা থাকলেও তিনি সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন না।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক লিয়াকত আলী ফরিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির রংপুর বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির কুমিল্লা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূইয়া বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, এই অর্ন্তবর্তী সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য। আমরা তাই সহযোগিতা করছি।
তিনি বলেন, বিএনপি হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। আমাদের দলের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগ টিকতে পারেনি। আপনারা যদি ষড়যন্ত্র করেন, আপনারাও টিকতে পারবেন না। মানুষ এখন নির্বাচনমুখী। তাই দ্রুত আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে দিন। আমরা আপনাদের সহযোগিতা করব।
সম্মেলন শেষে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান পলাশকে সভাপতি ও বর্তমান কমিটির সদস্য সচিব একেএম মুসাকে সাধারণ সম্পাদক করে আগামী দুই বছরের জন্য নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এদিকে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা রং-বেরঙের ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশে আসতে থাকেন। পরে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে সমাবেশ স্থল।
তবে ১৪৪ ধারা জারির ফলে সম্মেলনের পূর্ব নির্ধারিত স্থান বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরের এসএম মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সম্মেলন করতে পারেনি আয়োজকরা।
বাঞ্ছারামপুরে উপজেলা বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে গত সোমবার দুপুরে বিবদমান দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।
সংঘর্ষ চলাকালে ৪টি মোটরসাইকেলে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ কমপক্ষে ৩০টি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। আহতদের বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৪ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
সম্মেলনের বিরোধিতা করে একই মাঠে একই সময়ে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভার ডাকে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল খালেকের অনুসারীরা।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় মঙ্গলবার রাতে সম্মেলন স্থল ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন।
পরে উপজেলা বিএনপি বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরের এসএম মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে তাদের সম্মেলন উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের রাধানগর মাদ্রাসা মাঠে স্থানান্তর করে।
এদিকে বুধবার দুপুরে উপজেলা সদরের অদূরে কৃষ্ণনগর এলাকায় সড়কে গাছ ফেলে অবরোধ সৃষ্টি, গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন সম্মেলন বিরোধীরা।