নেত্রকোনায় ২৮ চেয়ারম্যান অনুপস্থিত, স্থানীয়দের ভোগন্তি
নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৪ পিএম
নেত্রকোনায় অন্তত ২৮ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কর্মস্থলে যাচ্ছেন না। এসব চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের পদধারী নেতা। ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পলানোর পর তাদের মধ্যে অনেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন। এতে করে সংশ্লিষ্ট পরিষদের দাপ্তরিক ও নাগরিক সেবামূলক কাজ বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি নাগরিকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখা সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনায় ৮৬ ইউনিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে ২৮ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। বেশি অনুপস্থিত কেন্দুয়া উপজেলায়। ওই উপজেলায় ১৩ ইউপির মধ্যে আশুজিয়া, দলপা, গড়াডোবা, সান্দিকোনাসহ ৯টিতেই চেয়ারম্যানরা অনুপস্থিত। আটপাড়া উপজেলার সাতটি ইউনিয়নেই অনুপস্থিত। দুর্গাপুরের চণ্ডীগড়, বিরিশিরি, কাকৈরগড়া, দুর্গাপুর সদর ও গাঁকান্দিয়ায় একই চিত্র। খালিয়াজুরির চাকুয়া ও সদর ইউনিয়ন; মদনের সদর ও কাইটাইল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান অনুপস্থিত রয়েছেন। অবশ্য ওই ইউনিয়নগুলোতে চেয়ারম্যানদের স্থলে প্যানেল চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে কলমাকান্দা উপজেলার পোগলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক অনুপস্থিত থাকায় ওই ইউপির আর্থিক লেনদেন ও প্রশাসনিক দায়িত্ব সহকারী কমিশনারের (ভূমি) ওপর দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ২৮ চেয়ারম্যান অনুপস্থিত এবং আরও বেশ কয়েকটি ইউপিতে চেয়ারম্যান নিয়মিত পরিষদে না আসায় দাপ্তরিক কাজ বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি সেবাগ্রহিতারা ভোগান্তিতে পড়ছেন। শিক্ষার্থীদের স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে নাগরিক সনদ ও জন্ম নিবন্ধন সনদ, জমি ক্রয়-বিক্রয়, খারিজ, নামজারি, ওয়ারিশান সনদ, অবসর, পেনশন, ভিজিডি, ভিজিএফ বিতরণ, বিভিন্ন ভাতাসহ সেবাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে ইউপি চেয়ারম্যানের সনদ বাধ্যতামূলক। অনেক প্যানেল চেয়াম্যানরা এসব বিষয়ে দক্ষ নন।
জেলার কলমাকান্দার পোগলা ইউনিয়নের ধীতপুর গ্রামের একজন বাসিন্দা বলেন, ‘চেয়ারম্যান না থাকায় এ্যাসিল্যান্ডকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা সহজে সেবা পাচ্ছি না।’
খালিয়াজুরির চাকুয়া গ্রামের একজন বাসিন্দা বলেন, ‘আমি ওয়ারিশানা সনদের জন্য বেশ কিছুদিন ধরে ঘুরছি। কিন্তু পাচ্ছি না। আমার মতো অনেকেই এরকম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।’
আটপাড়া উপজেলার নাম প্রকাশে একজন চাকুরী প্রার্থী বলেন, আমি সরকারের দপ্তরে চাকরির আবেদন করতে নাগরিক সনদ নিতে পারছি না। পরিষদে চেয়ারম্যানসহ কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। এতে করে আমার ভবিষ্যৎ জীবন হুমকিতে পড়বে।’
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মামুন খন্দকার বলেন, ‘যেসব পরিষদে চেয়ারম্যানরা আসে না, অর্থাৎ অনুপস্থিত সেখানে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সমস্যা হওয়ার কথা না।’