সাফজয়ের পর বাড়ি ফিরছেন রাঙামাটির ঋতুপর্ণা, রুপনা, খাগড়াছড়ির মনিকা চাকমাসহ পাহাড়ের কৃতী নারী ফুটবলাররা। তাদের আগমনে ঋতুপর্ণাসহ সাফজয়ী পাহাড়ের নারী ফুটবলারদের উঞ্চ সংবর্ধনা দিতে রাঙামাটিতে চলছে বর্ণাঢ্য আয়োজন। তাদের বরণে নতুন করে সাজছে পাহাড়।

২৩ নভেম্বর বিকালে রাঙামাটি চিংহ্লামং মারী স্টেডিয়ামে সর্বজনীন সংবর্ধনার আয়োজন করছে জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা।

জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঋতুপর্ণা, রুপনা, মনিকাসহ পাহাড়ের কৃতী নারী ফুটবলাররা পুরো জাতির অহংকার। আমরা সব সময় তাদের পাশে আছি। তাদের অর্জনকে সম্মান দেওয়ার কর্তব্য সবার। তারা বাড়ি ফিরছেন। তাই তাদেরর জন্য সর্বজনীন সংবর্ধনার আয়োজন চলছে। আমি তাদের সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করি।

এবারও নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার নারী সাফ ফুটবলের শিরোপা জিতেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের পাশাপাশি অর্জন করেছেন সেরা পুরস্কারও।

এর আগে ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর একই মাঠে একই প্রতিপক্ষ স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সাফ শিরোপা জিতেছিলেন বাংলাদেশের কৃতি নারী ফুটবলাররা।

এবারের সাফের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার জিতেছেন রাঙামাটির মেয়ে ঋতুপর্ণা চাকমা। গোল করে কৃতিত্ব গড়েছেন খাগড়াছড়ির মেয়ে মনিকা চাকমাও। আর সেরা গোলরক্ষকের খেতাব হাতে পেয়েছেন রাঙামাটির রুপনা চাকমা। তারা বাড়ি ফিরছেন জেনে এখন খুশির জোয়ার রাঙামাটির ঋতুপর্ণা ও রুপনার বাড়িতে।

অভ্যর্থনা জানাতে সাজছে রাঙামাটি। সংবর্ধনা জানাবে ঋতুপর্ণাদের উঠে আসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয়। এজন্য তারা ঋতুপর্ণাদের অপেক্ষায় বলে জানান বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক চন্দ্রা দেওয়ান।

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ বাংলাদেশ দলের সেরা নারী ফুটবলার ঋতুপর্ণার বাড়ি রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মগাইছড়ি গ্রামে। আর সেরা গোলরক্ষক রুপনার বাড়ি রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ভুয়ো আদাম গ্রামে। দুজনের পরিবারেই ছিল চরম অভাব অনটন। ছোটকালে বাবা হারিয়েছেন দুজনেই। মায়েদের কষ্টের সংসারে থেকে বেড়ে ওঠা তাদের। সেই অবস্থায় থেকে তাদের বর্তমান এ অবস্থানে উঠে আসা।

ঋতুর মা বসুমতি চাকমা বলেন, শিশু বয়সে ২০১৫ সালে ঋতুর বাবা ব্রজবাঁশি চাকমা মারা গেছেন। এক ভাই ও চার বোনের মধ্যে ঋতু চতুর্থ। একমাত্র ভাই পার্বন চাকমা ২০২২ সালের ২৯ জুলাই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মারা যায়। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ঋতুর অদম্য জয়ে আমি আজ আবেগাপ্লুত।

রুপনার মা কালা সোনা চাকমা বলেন, রুপনাদের এবারও জয়ে আমি খুবই আনন্দিত। রুপনা শুধু আমার সন্তান না। সে এদেশের সবার সন্তান। আমি তো শুধু তাকে গর্ভে ধারণ করেছিলাম।