বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন
শরীরে বুলেট নিয়ে মৃত্যুর অপেক্ষায় কলেজছাত্র তকবির
চিকিৎসা চালাতে সর্বস্বান্ত পরিবার
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০২ পিএম
শরীরে বুলেট নিয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিতে আহত কলেজছাত্র তকবির মিয়া। তার চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে পরিবারটি।
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের পরিবারটির উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম সিএনজিচালিত অটোরিকশাটিও বিক্রি করে দিতে হয়েছে। সিএমএইচসহ দেশের বড় বড় সরকারি হাসপাতাল ঘুরলেও আশার আলো দেখাতে পারেনি কেউ। বিদেশে চিকিৎসা করার সামর্থ্যও নেই পরিবারটির। মৃত্যুই যেন তার শেষ ভরসা।
আহত তকবির বানিয়াচং উপজেলার রঘু চৌধুরীপাড়ার ইসমাঈল মিয়ার ছেলে। তকবির স্থানীয় জনাব আলী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। পেশায় ফার্নিচার শ্রমিক ইসমাঈলের ৪ মেয়ে ও ৪ ছেলে। ৩ মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। বড় ছেলে তানভির মিয়া সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাচ্ছিলেন। ছোট ৩ ভাই ও ১ বোন লেখাপড়া করছে।
তকবিরের মা ফুলবাহার বেগম বলেন, আমার ছেলে দেশের জন্য যুদ্ধ করতে গিয়েছিল। এখন তাকে নিয়ে আমরা পুরো পরিবার যুদ্ধ করছি। জানি না আমার ছেলে বাঁচবে না মরবে। অটোরিকশাটি বিক্রি করায় বাকি জীবন কিভাবে চলব তা ভেবে দিশাহারা হয়ে পড়েছি।
তকবিরের বড় ভাই তানভির বলেন, ছোট ভাইয়ের চিকিৎসা করাতে আমাকে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতাল যেতে হচ্ছে। চিকিৎসা ব্যয় আমাদের পক্ষে বহন করা সম্ভব না।
বানিয়াচং উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক সালাউদ্দিন ফারুক বলেন, তকবিরের পরিবার দরিদ্র। ৫ আগস্ট সে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়। অস্ত্রোপচার করে বুলেট বের করতে হবে। শুনেছি অস্ত্রোপচার আমাদের দেশে সম্ভব নয়। পরিবারটি মারাত্মক দুরবস্থার মধ্যে পড়েছে। ব্যক্তিগত ও দলের পক্ষ থেকে তাকে সাধ্য অনুযায়ী সহায়তা করছি আমরা। এখনো পরিবারটি চিকিৎসার বিষয়ে সরকারি কোনো সহযোগিতা পায়নি।
জানা গেছে, ৫ আগস্ট সকালে বানিয়াচং উপজেলা সদরে শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলে মুহুর্মুহু গুলি ছুড়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। বুলেট এসে তকবিরের পেটের ভেতর দিয়ে গিয়ে মেরুদণ্ডের নিচের অংশে আটকে যায়। তখন থেকেই প্রতিনিয়ত ব্যথায় কাতরাচ্ছে সে।