প্রেমিককে আটকিয়ে বিয়ে, মেনে না নেওয়ায় শ্বশুরের রগ কাটল
চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৪ পিএম
ভোলার চরফ্যাশনে প্রেমিককে আটক করে রাতের আঁধারে জোরপূর্বক বিয়ে করেন প্রেমিকা। নববধূকে মেনে না নেওয়ায় শ্বশুরকে কুপিয়ে হাতের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নববধূর পরিবারের বিরুদ্ধে। শ্বশুর গুরুতর আহত হয়ে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রেমিক হাসানের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, জাহানপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. হোসেন মাঝির ছেলে মো. হাসানের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী রসুলপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা রুহুল আমিন জমাদারের মেয়ে খাদিজা বেগমের গত তিন বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে একাধিকবার দেখা সাক্ষাৎ হয়েছে তাদের।
গত ২০ সেপ্টেম্বর প্রেমিক হাসানকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাহায্যে জোরপূর্বক বিয়ে করেন প্রেমিকা খাদিজা। বিয়ের পর স্বামীকে পাঁচ দিন আটক রেখে স্বামীর পরিবারের লোকজনকে বিয়ে মেনে নিতে হুমকি দেয় খাদিজার পরিবার। পরে হাসান কৌশলে খাদিজার বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলে হাসানের বাবা মো. হোসেনকে বিয়ে মেনে নিয়ে ছেলেকে হাজির করতে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে খাদিজার পরিবার। গত ১২ নভেম্বর মঙ্গলবার রাতে নিরাপত্তা চেয়ে শশীভূষণ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন প্রেমিক হাসানের বাবা।
এদিকে থানায় অভিযোগ করার কথা শুনে নববধূ খাদিজাকে বর হাসানের বাড়িতে নিয়ে আসেন তার বড়বোন ও স্বজনরা। এ সময় শ্বশুর মো. হোসেন বিয়ের বিষয়টি জানতে চাইলে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে শ্বশুর মো. হোসেনের ওপর চড়াও হয়ে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হাতের রগ কেটে ফেলার অভিযোগ করেন শ্বশুর।
হাসানের পিতা মো. হোসেন বলেন, শুনেছি ছেলে হাসানকে জোরপূর্বক খাদিজাসহ তার পরিবারের লোকজন বাড়িতে ডেকে নিয়ে বিয়ে পড়ান। বিয়ের পর ছেলে কোথায় আছে সেটা আমার জানা নেই। তবে খাদিজাকে পুত্রবধূ হিসেবে মেনে নিতে তার পরিবারের অব্যাহত হুমকিতে নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। এতে তার পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে খাদিজাসহ বহিরাগতদের নিয়ে আমার বাড়িতে এসে আমার হাতের রগ কেটে দেয়। পরে আমার পরিবারের লোকজন চরফ্যাশন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেলে রেফার করেন।
নববধূ খাদিজা বলেন, স্বামী হাসান বিয়ের পাঁচ দিন পর পালিয়ে যায়। এরপর থেকে আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ না রাখায় আমার বড় বোনসহ পরিবারের লোকজন নিয়ে স্বামীর অধিকার চেয়ে হাসানের বাড়িতে যাই। এ সময় হাসানের বাবার সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে যায়। তবে কিভাবে হাতের রগ কেটেছে সেটা আমার জানা নেই।
শশীভূষণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারিক হাসান রাসেল জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।