টঙ্গীতে নিরাপত্তাবেষ্টনী ছাড়াই নির্মাণ হচ্ছে বহুতল ভবন
টঙ্গী পশ্চিম (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৫ পিএম
গাজীপুরের টঙ্গীতে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে নিরাপত্তাবেষ্টনী ছাড়াই নির্মাণ করা হচ্ছে বহুতল ভবন। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যাচ্ছেতাই নির্মিত হচ্ছে অপরিকল্পিত ভবনটি।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (গাউক) কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ায় আবাসন ব্যবসায়ীরা তাদের খেয়াল-খুশিমতো বহুতল ভবন নির্মাণ করে চলেছেন। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাবেষ্টনী ছাড়াই নির্মাণ কাজ করায় বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী পথচারীদের ওপর পড়ে গুরুতর আহত হচ্ছেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিয়ে ইমারত নির্মাণ করায় ওপর থেকে পড়ে কেউ কেউ আবার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন।
সরজমিনে ঘুরে জানা যায়, টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকায় আউচপাড়া, খাঁ-পাড়া, মোল্লাবাড়ি, মোক্তারবাড়ি, সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি রোড, কলেজরোড, চেরাগআলী-ভাদাম রোড, বড় দেওড়া, মিত্তিবাড়ি, সিংবাড়ি, গাজীপুরা, সাতাইশ, মুদাফা, গুটিয়া, গুশুলিয়া, বাকরাল, ভাদাম, দত্তপাড়া, কাজীপাড়া, আরিচপুর, বউবাজার, পাগার, মধুমিতা, টঙ্গীবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।
গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কোনো প্রকার তদারকি না থাকায় এসব বহুতল ভবন নির্মাণকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেছেন। অধিকাংশ ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নিরাপত্তাবেষ্টনী ছাড়াই দেদার চালিয়ে যাচ্ছেন নির্মাণ কাজ। এতে প্রতিনিয়ত হতাহতের ঘটনাও ঘটছে।
যথাযথ নির্মাণ প্রক্রিয়া না মানায় এবং নিরাপত্তাবেষ্টনী না থাকায় কলেজ রোডের নাহার গার্ডেন নামক বহুতল ভবন থেকে লোহার রড মাথায় পড়ে মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) গুরুতর আহত হয়েছেন রাকিবুল হাসান নাঈম নামে এক সবজি ব্যবসায়ী। তিনি বর্তমানে ঢাকার উত্তরা একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ইতোপূর্বেও ওই ভবনের ওপর থেকে ইট, কাঠসহ নানা নির্মাণসামগ্রী পড়ে কয়েকজন নারী-পুরুষ আহত হয়েছেন।
এর আগে গত শনিবার (৯ নভেম্বর) সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি রোডের হালিম ম্যানশন নামক ১০তলা ভবন থেকে ইট মাথায় পড়ে কল্পনা আক্তার (২০) নামে এক নারী গুরুতর আহত হন। তিনিও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এছাড়া সম্প্রতি টঙ্গী বিসিক এলাকার রেডিয়ান্ট ভবনে কাজ করার সময় ফয়েজ উদ্দিন (৫০) নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
যোগাযোগ করা হলে কলেজ রোড এলাকার নাহার গার্ডেনের মালিক মোশাররফ হোসেনকে পাওয়া যায়নি। তবে তার ভাই সন্ত্রাসী মজিবুর রহমান প্রতিবেদকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে বলেন, আপনি তথ্য চাওয়ার কে, আপনাকে তথ্য দেব কেন?
যোগাযোগ করা হলে হালিম ম্যানশনের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইব্রাহীম কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপারস লিমিটেড কোম্পানির পরিচালক আমজাদ হোসেন রাজন বলেন, আমরা প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাবেষ্টনী দিয়ে নির্মাণ কাজ করছি।
এ বিষয়ে যোগযোগ করা হলে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান ইমারত পরির্দশক মো. ওমর ফারুক বলেন, যারা শতভাগ নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিয়ে ইমারত নির্মাণ করবে আমাদের চেয়ারম্যান স্যারের নির্দেশে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে গত কয়েকদিন যাবত টঙ্গীসহ পুরো গাজীপুরে মাইকিং করা হচ্ছে।