কুপ্রস্তাব দেওয়ায় রুবেলকে ডেকে নেয় শ্রাবণী, হত্যা করে বিজয়
সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৯ এএম
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে চাঞ্চল্যকর রুবেল হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাব। কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে অবৈধ সম্পর্কের স্পর্শকাতর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিলে রুবেলকে মোবাইলে ডেকে নেয় শ্রাবনী। আর কাপড় কাটার কেঁচি দিয়ে হত্যা করে বিজয়। পরে লাশ ও আলামত ধলেশ্বরী নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় র্যাব-৪ এর একটি দল রুবেল (৩৬) হত্যার মূলহোতা মো. বিজয় (১৯) ও মোছা. শ্রাবনী আক্তারকে (১৮) মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের ফোর্ডনগর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার ঘটনা শিকার করেছে।
জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত বিজয় ও শ্রাবনী আক্তার এবং ভিকটিম রুবেল হোসেন প্রতিবেশী। শ্রাবনী আক্তারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল ভিকটিমের প্রতিবেশী ভাতিজা বিজয়ের সঙ্গে। এ নিয়ে এলাকায় জানাজানি হলে ভিকটিম রুবেল ঘটনার ৫ দিন আগে বিজয়ের মোবাইলের স্পর্শকাতর ছবি নিজের মোবাইলে নেয় এবং অবৈধ সম্পর্ক থেকে সরে আসতে বলে।
এদিকে রুবেল শ্রাবণীকে কুপ্রস্তাব দেয়। কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে অবৈধ সম্পর্কের স্পর্শকাতর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। শ্রাবনী বিষয়টি বিজয়কে জানিয়ে দেয়। পরে বিজয় ও শ্রাবনী ক্ষিপ্ত হয়ে রুবেলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। বিজয়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৬ নভেম্বর দিবাগত রাত ১টার দিকে শ্রাবনী মোবাইল ফোনে রুবেলকে ফোর্ডনগর এলাকায় আক্তার ডেয়ারি ফার্ম সংলগ্ন ধলেশ্বরী নদীর পাড়ে আসতে বলে।
সেখানে রুবেল ও শ্রাবনী দেখা করে কথা বলতে থাকে। এক পর্যায়ে ওঁত পেতে থাকা বিজয় পিছন দিক থেকে রুবেলের মাথার পিছনে ইট দিয়ে আঘাত করে। এতে রুবেল মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এর পর রুবেলের পা চেপে ধরে শ্রাবনী। বিজয় তার সঙ্গে থাকা কাপড় কাটার বড় কেঁচি দিয়ে মাথায় ও গলায় উপর্যুপরি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে রুবেলের মৃতদেহ ও আলামত ধলেশ্বরী নদীতে মধ্যে ফেলে দিয়ে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায় তারা।
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় লোকজন নদীতে ভাসমান লাশ দেখতে পেয়ে সিংগাইর থানায় খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
র্যাব-৪, সিপিসি-৩ এর লে. কমান্ডার মো. আরিফ হোসেন বলেন, রুবেল হত্যার ঘটনায় তথ্য-প্রযুক্তি ও ঘটনাস্থলে থাকা পারিপার্শ্বিক আলামত এবং তথ্যের ভিত্তিতে রহস্য উদঘাটন করে বিজয় ও শ্রাবনীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। এ ঘটনায় সিংগাইর থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। আসামিদের সিংগাইর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।