কমলগঞ্জে ৭ ফুট লম্বা কাঁদি, হাজারের বেশি কলা
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৭ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
একটি কাঁদিতে কতটি কলা থাকতে পারে? ভাবছেন কত আর, ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০; কিন্তু কখনো কি শুনেছেন কলার কাঁদি ৭ ফুট লম্বা আর তাতে হাজারের বেশি কলা ধরেছে? এমনই অবাক করা দুটি কলাগাছের দেখা মিলেছে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার আলিনগর ইউনিয়নের মুনিম সিদ্দীকির বাড়িতে।
কলার কাঁদি ৭ ফুট লম্বা আর তাতে হাজারের বেশি কলা ধরেছে। সেই কলা দেখতে আসছেন আশপাশের এলাকার কৌতূহলী মানুষ।
কৃষিবিদরা বলেছেন, বাংলাদেশে এটি হাজারি কলা নামে পরিচিত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এর নাম থাউজেন্ডস ফিঙ্গার ব্যানানা। থাউজেন্ডস ফিঙ্গার ব্যানানা বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা কাঁদির কলা হিসেবে পরিচিত।
মানুষ শখের বসে চাষ করেন এটি। এ প্রাজাতির কলার আদি নিবাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায়। এ ধরনের কলা গাছে একেকটি কাঁদি ৬ ফুট থেকে ১০ ফুট লম্বা হয়। কাঁদির ওপরের অংশের কলা বড় হলেও নিচের অংশের কলা ছোট থেকে যায়। এ ধরনের কাঁদি গাছের সৌন্দর্য অনেক বাড়িয়ে দেয়।
কমলগঞ্জ উপজেলার আলিনগর ইউনিয়নের যোগীবিল গ্রামের বাসিন্দা এবং ‘এসো বাগান করি’ নামর একটি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডমিন মুনিম সিদ্দীকি।
তিনি বলেন, আমি এক সেনা অফিসারের স্ত্রীর (ভালুকায় অবস্থানকারী) মাধ্যমে ফিলিপাইন থেকে এই কলাগাছ সংগ্রহ করেছি। আমার বাড়িতে দুইটা কলাগাছে ফল ধরেছে। ৬ থেকে ৭ ফুট লম্বা কাঁদি হয়েছে। এগুলো আরও লম্বা হবে। একেকটি কাঁদিতে হাজারের বেশি কলা ধরেছে।
মুনিম সিদ্দীকি বলেন, শখের বসে রোপণ করেছি। এটির প্রকৃত নাম থাউজেন্ডস ফিঙ্গার ব্যানানা আর বাংলাদেশে হাজারি কলা বলে ডাকা হয়। আমার কাছে এই কলা গাছের কিছু চারা ছিল। যারা দেখতে আসেন তাদের মধ্যে অনেকেই আমার কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমি বৃক্ষপ্রেমী মানুষ। আমার বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের দেশি বিদেশি ফলজ ও বনজ গাছ রয়েছে। অনেকেই আসেন কলা গাছ সহ বিভিন্ন ধরনের গাছ দেখতে। আমরা এই কলাকে দুভাবে ব্যবহার করতে পারি। একটি হচ্ছে খাওয়ার জন্য, অপরটি হচ্ছে অর্নামেন্টাল প্লান্ট হিসেবে। আমি মূলত বাড়িতে সাজসজ্জা বৃদ্ধির জন্য লাগিয়েছি। এই কলার ছড়ির ওপরের অংশের কলা পোক্ত হলে খাওয়া যায়।
থাউজেন্ডস ফিঙ্গার ব্যানানা দেখে প্রকৌশলী রাকিব আহমেদ বলেন, আমরা মুনিম সিদ্দীকির বাড়িতে ঘুরতে গিয়েছিলাম। এখানে বিভিন্ন ধরনের গাছগাছালি আছে। তবে থাউজেন্ডস ফিঙ্গার ব্যানানা দেখে অবাক হয়েছি। একটি কলাগাছে ৭ থেকে ৮ ফুট লম্বা কলার ছড়ি ধরেছে। ছড়ির ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত কয়েক হাজার কলা ধরেছে। দেখতে অনেক সুন্দর লেগেছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, এ প্রজাতির কলাকে বিদেশে থাউজেন্ডস ফিঙ্গার ব্যানানা বলে। আমাদের দেশে খুবই বিরল এই কলা। এই কলা আকারে অনেক ছোট হলেও কাঁদিতে কয়েক হাজার হয়।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ হাজারি কলা হিসেবে এটি পরিচিত। কেউ চাইলে এই কলা খেতে পারবে। আবার কেউ বাড়ির সাজসজ্জার জন্য লাগিয়ে থাকেন। সঠিক পদ্ধতিতে এই কলা পরিচর্যা করলে ছড়ির আকার বড় হতে পারে।