আবুল হাসানাতসহ আ.লীগের ৯০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৭ পিএম
বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত পথযাত্রা কর্মসূচি পালনের জন্য বরিশালের গৌরনদীতে প্রস্তুতি সভায় হামলা চালিয়ে বিএনপির ৯ নেতাকর্মীকে মারপিট এবং বিএনপি নেতার সর্দার মার্কেট ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহসহ ৯০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় সাবেক পৌর মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান এবং ৩ মেম্বারসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪০ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ রয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ নেতাকর্মীকে আসামি করে থানায় মারামারি, চাঁদাবাজি ও বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ও উত্তর মাগুরা গ্রামের বাসিন্দা আক্কেল সরদার বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র মো. হারিছুর রহমান, সহ-সভাপতি ও খাঞ্জাপুর ইউপির চেয়ারম্যান নুর-আলম সেরনিয়াবাত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুন্সী, সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি সুমন মোল্লা, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের ইসলাম সান্টু ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান দ্বীপ, খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মতলেব মাতুব্বর, সহসভাপতি কালাম হোসেন ফকির, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সেরনিয়াবাত, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর আলামিন হাওলাদার, খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ফরিদ বেপারী, সহসভাপতি পান্নু মৃধা, সাধারণ সম্পাদক জব্বার বেপারী, দপ্তর সম্পাদক জসিম মাতুব্বর, খাঞ্জাপুর ইউপির সদস্য আ[লীগ নেতা ফারুক মৃধা, মেম্বার গিয়াস মৃধা, মেম্বার সোহেল সরদার, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য শহীদ ফকির, ইদ্রিস হাওলাদার, দুলাল সেরনিয়াবাত, নেছারউদ্দিন হাওলাদার, হেমায়েত ফকির, কুদ্দুস মাতুব্বর, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রিফাত সরদার, ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মিজান বেপারী, ৩নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি শাহজাহান হাওলাদার, যুবলীগ নেতা কালাম হাওলাদার, ছাত্রলীগ নেতা সৈকত ফকির, শামীম তালুকদার ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক সরদার, আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান মিয়া, সাকিল মাতুব্বর, আলামিন মাতুব্বর, ছাত্রলীগ নেতা শাওন হাওলাদার, কামাল ফকির, রুবেল সরদার, বাচ্চু বেপারী, আফজাল ফকিরসহ অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ নেতাকর্মী।
বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত পথযাত্রা কর্মসূচি পালনের জন্য ২০২৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় দিকে মাগুরা মাদারীপুর নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসায় মাঠে খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন বিএনপির প্রস্তুতি সভা শুরু করেন। এ সময় ১নং আসামি হাসানাত আব্দুল্লাহর নির্দেশ হারিছুর রহমান ও ফরহাদ মুন্সীর নেতৃত্বে মামলার আসামিরা গোলাবারুদ, আগ্নেয়াস্ত্র, রামদা, চাইনিজ কুড়াল ও লোহার রড় নিয়ে পথযাত্রার প্রস্তুতি সভায় হামলা চালিয়ে সভা পণ্ড করে বিএনপির ৯ নেতাকর্মীকে পিটিয়ে আহত করে। তখন আসামিরা বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আসামি সুমন ও গিয়াস মৃধা বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে রিভলভার দিয়ে গুলিবর্ষণ করে ও সান্টু ভূঁইয়া চাপাতি দিয়ে মাথায় কোপ দিলে সরে গেলে অন্য কয়েকজন আসামি বাদীকে বেদম মারপিট করে।
একই রাত ৮টার দিকে আসামিরা বাকাই বাজারের বাদীর মালিকানাধীন সর্দার মার্কেটে সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মার্কেটের ভেতর প্রবেশ করে ১০-১২টি দোকান ভাঙচুর করে ৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় হারিছুর রহমানের নির্দেশে ৪-৫ জন আসামি মার্কেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিলে দোকান খুলে দেওয়া কথা বলে যায়। পরবর্তীতে মার্কেটের ২৭টি দোকানের ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে ৭০ হাজার টাকা করে ১৭ মাসে ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা উত্তোলন করে নিতেন আসামি নুর আলম, মতলেব, মোস্তফা, সান্টু ভূঁইয়া ও নেছারউদ্দিন।
গৌরনদী থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া জানান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর নামে ১টি, সাবেক পৌর মেয়র হারিছুর রহমানের নামে ৬টি ও সাবেক ভিপি সুমন মোল্লার নামে ৪টি মামলা গৌরনদী থানায় রয়েছে। বর্তমানে হারিছ ৪টি মামলায় বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রয়েছেন। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।