আলোচনায় আমুর পালিত মেয়ে সুমাইয়া
আকতার ফারুক শাহীন, বরিশাল
প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২১ পিএম
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু বাড়িতে থাকত বস্তায় বস্তায় টাকা। সেই মানুষটার কিনা দেশে মাত্র তিনটি বাড়ি ছাড়া আর কিছু নেই। ভাবতে যখন খটকা লাগে ঠিক তখনই আলোচনায় উঠে আসে তার পালিত মেয়ে সুমাইয়া হোসেনের নাম।
ব্যক্তি জীবনে নিঃসন্তান আমু তার শ্যালিকা মেরী আক্তারের কন্যা এই সুমাইয়াকে পালক হিসেবে নেন আরও বহু বছর আগে। বর্তমানে দুবাইতে থাকা এই সুমাইয়ার বিয়েও হয়েছে দুবাই প্রবাসী এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর সঙ্গে। অবৈধ পন্থায় আয় করা শতকোটি টাকা ওই মেয়ের কাছে পাঠিয়েছেন আমু, এটাই এখন আলোচনা ঝালকাঠি শহরে।
পরিচয় না প্রকাশের শর্তে জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘এমন কোনো সেক্টর নেই যেখান থেকে টাকা পেতেন না আমু। সব টাকাই নগদে পৌঁছাত তার কাছে। লেনদেনের মাধ্যম হিসাবে কাজ করতেন ভায়রা ফখরুল মজিদ কিরন। এই কিরনও ছিলেন একটি রহস্যময় চরিত্র।
শিল্পমন্ত্রী থাকাকালে আমুর এপিএস ছিলেন কিরন। সর্বশেষ সরকারে আমুকে মন্ত্রী করা না হলেও তার সংস্পর্শেই থেকে যান তিনি। বিস্ময়ের ব্যাপার হলো আমুর পাশাপাশি সদ্য সাবেক সরকারে দায়িত্ব পালন করা শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ হুমায়ুনেরও এপিএস ছিলেন কিরন।
ঝালকাঠির বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, আলোচিত এই কিরনের বাড়ি ঢাকা বিভাগের নরসিংদী জেলায়। সর্বশেষ শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ হুমায়ুনের আপন ছোট ভাই কিরন তার নিজের এলাকা বাদ দিয়ে পড়ে থাকতেন ঝালকাঠি। কেবল সম্পদ ভান্ডারের দেখাশোনা আর পার্সেন্টেজ আদায় নয়, নির্বাচনি এলাকায় আমুর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডও দেখাশোনা করতেন তিনি।
পরিচয় না প্রকাশের শর্তে নলছিটি উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা এক ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমুর সঙ্গে দেখা করতে হলে অনুমতি নিতে হতো কিরনের। উন্নয়নমূলক সব কাজের ভাগ-বাটোয়ারা করতেন তিনি। তার কথার বাইরে বলতে গেলে এক পা-ও চলতেন না আমু। পরিস্থিতি এমন ছিল কিরন যেন ছিলেন আমুর ছায়া। এই কিরনের মাধ্যমেই নির্বাচনি এলাকা থেকে শত শত কোটি টাকা কামিয়েছেন আমু। যার প্রায় পুরোটাই এখন দুবাইতে তার মেয়ে সুমাইয়ার কাছে আছে বলে ধারণা সবার। এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য আমু ও কিরনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি কাউকে। মোবাইলে খুদে বার্তা দিয়েও মেলেনি উত্তর।
ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম বলেন, সাবেক এমপির বাসা থেকে পাঁচ কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনায় আমরা একটি সাধারণ ডায়রি করেছি। টাকা জমা আছে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।