দৃষ্টি হারানো বাবুর ঘটনায় ৮৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৯ পিএম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজপথ কাঁপানো মো. আব্দুল্লাহ বাবু গুলিবিদ্ধ হয়ে চোখের দৃষ্টি হারানোর ঘটনায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৮৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বাবুর বাবা মো. আব্দুল বারিক শেখ বাদী হয়ে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রোববার মামলা দায়ের করেন। তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের কলতাপাড়া গ্রামের মৃত ইজ্জত আলীর পুত্র।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক মহাপুলিশ পরির্দক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক র্যাব পরিচালক মো. খোরশেদ হোসেন, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার, সাবেক ডিএমপি কমিশনার মো. হাবিবুর রহমান, ঢাকা দক্ষিন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মিহউদ্দিন মহি, ঢাকার দক্ষিন মহানগরের যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইনুদ্দিন রানা, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, টুটুল, রফিকুল ইসলাম, মশিউর রহমান সজল, মইন উদ্দিন ও রাগিব আহসান প্রমুখ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জুলাইয়ের ১৯ তারিখে বন্ধুদের সঙ্গে রাজপথ কাঁপিয়ে ছিলো মো, আব্দুল্লাহ বাবু। ওই জুম্মার নামাজ শেষে যাত্রাবড়ি গোলাপবাগ চলছিল কোটাবিরোধী আন্দোলন। মিছিলের সম্মুখভাগে ছিল বাবু। হঠাৎ একটি বাসার ভিতর থেকে বেড়িয়ে এসেই পুলিশ সরাসরি রাবার বুলেট ছুটতে থাকে। ওর চোখ, মুখ-নাকেও গুলিবিদ্ধ হয়।
তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের কলতাপাড়া গ্রামের মো. আব্দুল বারিক শেখের পুত্র। থাকেন এখন ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ইকুরিয়া এলাকায়। ঢাকায় যখন ভারী যানবাহন বা কখনও প্রাইটকার চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। বাবা-মা, স্ত্রী ও এক শিশু সন্তান নিয়ে তার সুখের সংসার ছিল। সেই সুখ আর চোখের দৃষ্টি কেড়ে নিল বুলেট।
আব্দুল্লাহ বাবু জানায়, আমরা একটি স্বপ্ন নিয়ে স্লোগান ধরেছিলাম। সেই স্বপ্ন পূরণে একটি-দুটি চোখ কেনো, জীবন চলে গেলেও ফিরে আসতাম না। ঝাপসা চোখেই ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন দেখেছি! এ আমার মহানন্দ! সন্তান আর স্ত্রীর দিকে তাকালে এখন জীবনটাই ঝাপসা দেখি। আমার চিকিৎসা করাতে গিয়ে বাবাকে আবারও রাস্তায় নামতে হয়েছে। গাড়ির স্টিয়ারিং ধরতে হচ্ছে।