Logo
Logo
×

সারাদেশ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

ডান হাতের পর বামটিও হারানোর শঙ্কায় রানা

Icon

মো.মোস্তফা আবিদ, নীলফামারী

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১২ পিএম

ডান হাতের পর বামটিও হারানোর শঙ্কায় রানা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে এক হাত হারানো রানার অর্থাভাবে সুচিকিৎসা হচ্ছে না। চিকিৎসার অভাবে তার অপর হাতটিরও ধীরে ধীরে কর্মক্ষমতা হারিয়ে যাচ্ছে।

নীলফামারী সদর উপজেলার গোড়গ্রাম ইউনিয়নের তিলবাড়ী ময়দানপাড়া এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমানের ছেলে রানা ইসলাম (২০)। দারিদ্র্যের কারণে লেখাপড়া করতে পারেননি। ছয় সদস্যের সংসার দরিদ্র বাবার একার পক্ষে চালানো কষ্টসাধ্য হওয়ায় তিনি ঢাকায় শ্রমিকের কাজ করতেন।

২৫ জুলাই ঢাকার বসুন্ধরা এলাকায় ছাত্র-জনতা মিছিল বের করলে রানাও সে মিছিলে অংশ নেন। পুলিশ সে মিছিলে ব্যাপক টিয়ারশেল ও গুলিবর্ষণ করে। এ সময় রানা গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে মিছিলের লোকজন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। রানার ডান হাতটি গুরুতর জখম হওয়ায় সেটি কুনই পর্যন্ত কেটে ফেলেন চিকিৎসকরা। 

এছাড়া তার বাম হাত, পেট ও পা আগুনে পুড়ে যাওয়াসহ গুরুতর জখম হয়। ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে এতদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। বর্তমানে সেখানে থাকা-খাওয়া, ওষুধ ও অন্যান্য খরচের টাকার অভাবে ১৮ অক্টোবর রানাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। 

রানা বলেন, ‘বাবা অনেক কষ্ট করে আমাদের সংসার চালান। তাই বাবাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করার জন্য ঢাকায় কাজ করতে যাই। আন্দোলনের কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদের সঙ্গে আমিও ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়ে পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেছি। এখনো ঠিকমতো হাঁটতে পারি না। চিকিৎসার অভাবে বাম হাতও অচল হয়ে যাচ্ছে।’ 

রানার বাবা মিজানুর রহমান বলেন, ‘ছেলেকে সুস্থ করতে বাড়ির গরু-ছাগল বিক্রি করে এবং অন্যের কাছ থেকে ধারদেনা করে প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ করেছি। কিন্তু তারপরও সে পুরোপুরি সুস্থ হয়নি। টাকার অভাবে তাকে বাড়িতে নিয়ে এসেছি। ডাক্তার রানাকে ১৫ দিন পর ঢাকায় নিয়ে পরীক্ষা করাতে বলেছেন। কিন্তু টাকার অভাবে তাকে নিয়ে যেতে পারছি না। এছাড়া রানার অপর হাতটিও চিকিৎসার অভাবে দিন দিন অচল হয়ে যাচ্ছে।’ 

তিনি ছেলের সুচিকিৎসার জন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল হক বলেন, ‘আমি যতদূর জানি সিভিল সার্জন কার্যালয়ে আহতদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ সেল গঠন করা হয়েছে। সেখানে যোগাযোগ করলে রানার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।’

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম