‘আশ্চর্য প্রদীপ’ মামলা: পুলিশি হয়রানি ও ঘুস আদায়ের অভিযোগ
ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৬ পিএম
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নে বিএনপি অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি এখন পুলিশের কাছে ‘আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপ’ হয়ে উঠেছে।
চলতি বছর ৬ সেপ্টেম্বর জুলফিকার আলী নামে এক ব্যক্তির দেওয়া অভিযোগকে মামলা হিসেবে দায়ের করে ভাঙ্গুড়া থানা। এতে নাম উল্লেখ করে ২৫ জন এবং অজ্ঞাত আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
থানা পুলিশ এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৩ জনকে আটক করে তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করেছে, তবে তারা জামিনে মুক্ত আছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আটক ব্যক্তিদের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তির বিনিময়ে টাকা দাবি করা হয়, যা মধ্যস্থতা করেন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী রকিবুল ইসলাম বাবুল। পুলিশ আটক ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে অর্থ প্রদানের জন্য আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার সময় দেয়। টাকা না দিলে তাদের বিরুদ্ধে পাবনার ৪ আগস্টের গোলাগুলির ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলায় চালান দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
এছাড়া পুলিশ এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের আটকের তালিকা আছে জানিয়ে ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সর্বশেষ ডিজিএফআই থেকে ১৬ জনের একটি তালিকা পাঠানোর খবর দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
যুগান্তরের সঙ্গে আলাপকালে আলোচিত ব্যবসায়ী বাবুল জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলামকে গ্রেফতারের পর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসনায়েন রাসেলের অনুরোধে তিনি থানায় গিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেন, তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক নাজমুল হুদা কালুও ছিলেন। তবে তার মাধ্যমে পুলিশকে টাকা প্রদানের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল করিম জানান, পুলিশের সুনাম নষ্ট করার জন্য একটি মহল এমন গুজব ছড়াচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এজাহারনামীয় ২৫ আসামিসহ আটক হওয়া সবাই জামিনে মুক্ত আছেন এবং পাবনার কোনো মামলায় ভাঙ্গুড়া পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি গ্রেফতারের সুযোগও নেই।
মামলার এই ঘটনাগুলি নিয়ে স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে বিভিন্ন প্রশ্ন ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। থানার দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কাছে এইসব বিষয় আরও স্বচ্ছভাবে ব্যাখ্যা করার দাবি উঠেছে।