ফরিদপুরের নগরকান্দায় কথিত বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কবিরের বিরুদ্ধে বিধবা আসমা বেগমের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর এবং জোরপূর্বক দখল নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, উপজেলার তালমা ইউনিয়নের ধুতরাহাটি-রসুলপুর বাজার এলাকায় কুমার নদের পাড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় সরকারি জায়গায় দোচালা টিনের ঘর নির্মাণ করে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে বসবাস করছেন মৃত মো. মফিজ মিয়ার বিধবা স্ত্রী আসমা বেগম (৪৮)।

আসমা বেগম বলেন, আমি দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে এই জায়গায় বসত করে আসছি। আমাদের এই বসতবাড়িটুকু ছাড়া আর কোনো জায়গা জমি নাই। এ বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর এলাকার প্রভাবশালী সালাহউদ্দিন কবির জাল স্ট্যাম্প দেখিয়ে এই বাড়ি থেকে আমাদের উচ্ছেদ করে জোরপূর্বক দখল নেওয়ার চেষ্টা করছে।  সালাহউদ্দিন কবির ও তার লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা ভাঙচুর চালিয়েছে। বাড়ি ছেড়ে না দিলে আমাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমরা এখন প্রাণ ভয়ে আতঙ্কের মধ্যে আছি।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় অঝোরে কাঁদছিলেন দরিদ্র অসহায় বিধবা আসমা বেগম। তার চোখের পানিই বলে দিচ্ছিল অসহায়ত্বের কথা। তার আশ্রয়স্থল এক টুকরো ভিটে রক্ষা করতে, প্রশাসনের কাছে মানবিক সহযোগিতা চান তিনি।

তালমা ইউনিয়নের বিলনালিয়া গ্রামের আ. গফুর মাতুব্বরের ছেলে মো. সালাহউদ্দিন কবির (৩৯) জায়গার মালিকানা দাবি করে বলেন, বাড়ির জায়গাটি স্ট্যাম্পের মাধ্যমে আমি কিনেছি। গত ৬ বছর আগে একহাজার টাকা মাসিক ভাড়ার বিনিময়ে মো. মফিজ মিয়ার স্ত্রী আসমা বেগমকে বাড়িটি ভাড়া দিয়েছিলাম। কিন্তু ছয়মাস ধরে ভাড়ার টাকা দিচ্ছে না। এমনকি বাড়ি ছেড়ে দিতে বলছি কিন্তু তারা এখন বাড়ি ছাড়তে চাচ্ছে না। তাই আমি বাধ্য হয়ে নগরকান্দা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।

স্থানীয়রা জানান, সালাহউদ্দিন কবির আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে থেকে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বিপুল সম্পদ ও টাকা পয়সার মালিক হয়েছেন। আওয়ামী সরকারের পতনের পর এখন তিনি নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করছেন। বিএনপির নাম ভাঙিয়ে এলাকার দরিদ্র অসহায় মানুষদের জায়গা জমি দখল করে তাদের সর্বহারা করার খেলায় মেতে উঠেছে।

নগরকান্দার সহকারি কমিশনার (ভুমি) মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা অথবা সরকারি খাস জায়গা সরকারি বিধি মোতাবেক লিজ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই জায়গা ক্রয়-বিক্রয় বা হস্তান্তর করার কোনো বিধান নেই।

নগরকান্দা থানার ওসি মোহাম্মদ সফর আলী বলেন, সালাহউদ্দিন কবির থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছে। তবে এ বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ড অথবা আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। বাড়িঘরে হামলার ব্যাপারে আসমা বেগমের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।