Logo
Logo
×

সারাদেশ

বগুড়ায় মামলার সাক্ষী রাজমিস্ত্রির মৃত্যু, পরিবারের ধারণা হত্যা

Icon

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৪ পিএম

বগুড়ায় মামলার সাক্ষী রাজমিস্ত্রির মৃত্যু, পরিবারের ধারণা হত্যা

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে জমিজমা সংক্রান্ত মামলার সাক্ষী রাজমিস্ত্রি মো. নুরুন্নবীর (২৬) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ওই মামলার আসামির বাড়ির কাছে বাঁশঝাড়ে মাটির সঙ্গে দুই পা লাগানো তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

সম্প্রতি উপজেলার হাটফুলবাড়ি ইউনিয়নের রামনগর ঠাটির ব্রিজ মণ্ডলবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের ভাই আলমগীর হোসেন দাবি করেছেন, তার ভাইকে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।

সারিয়াকান্দি থানার এসআই তোজাম্মেল জানান, সুরতহালে আত্মহত্যা মনে হয়েছে। এরপরও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে এটি হত্যা না আত্মহত্যা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, পেশায় রাজমিস্ত্রি মো. নুরুন্নবী বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটফুলবাড়ি ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের মৃত কান্টু প্রামাণিকের ছেলে। পাশের রামনগর ঠাটির ব্রিজ মণ্ডলবাড়ি গ্রামের ডা. আক্কাস আলীর ছেলে সুমনের সঙ্গে প্রতিবেশী মৃত বাঘা মণ্ডলের ছেলে নাহিদুজ্জামান মণ্ডলের সৌরভের জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে সুমনপক্ষ মামলা করলে রাজমিস্ত্রি নুরুন্নবীকে সাক্ষী করা হয়। পুলিশ গত ১৫ অক্টোবর আদালতে মামলার প্রতিবেদন দাখিল করে।

বৃহস্পতিবার বিকালে নিহতের ভাই আলমগীর হোসেন জানান, তার ভাই নুরুন্নবী পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন। স্ত্রী ছাড়াও এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। পরিবারে তাদের কোনো অশান্তি ছিল না। নুরুন্নবী গত ১৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে রামনগর ঠাটির ব্রিজ মণ্ডলবাড়ি গ্রামের মৃত মুন্নু মণ্ডলের ছেলে কোয়েল মণ্ডলের বাড়িতে কাজে যান।  বেলা সাড়ে ১০টার দিকে ওই এলাকার হেলালের স্ত্রী বেবি ফোনে জানান, নুরুন্নবী গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে।

 

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ওই মামলার আসামি নাহিদুজ্জামান মণ্ডল সৌরভের বাড়ি থেকে ৫০ ফুট দূরে বাঁশঝাড়ে বাঁশের সঙ্গে নুরুন্নবীর গলায় গামছার ফাঁস দেওয়া লাশ দেখতে পাওয়া যায়। মরদেহের দুই পা মাটির সঙ্গে লাগানো ছিল।

নিহতের ভাই আলমগীর হোসেন আরও জানান, তার ভাইয়ের লাশের সুরতহালে আত্মহত্যার কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি। গলায় ফাঁসের কোনো চিহ্ন ছিল না। থুঁতনিতে আঘাতের দাগ ছিল। তার ধারণা- মামলার সাক্ষী হওয়ার কারণে তার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দিতে লাশ বাঁশের সঙ্গে গামছা দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে হত্যা এলে তিনি আদালতে হত্যা মামলা করবেন।

এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সারিয়াকান্দি থানার এসআই তোজাম্মেল জানান, নুরুন্নবী কোনো মামলার সাক্ষী ছিল কিনা সে ব্যাপারে তাদের কিছু জানা নেই। পরিবার থেকে কেউ হত্যা হিসেবে দাবিও করেননি। প্রাথমিক তদন্তে এটাকে আত্মহত্যা মনে হচ্ছে।

নিহতের পা কেন মাটির সঙ্গে লাগানো ছিল- এ প্রসঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ওজনের কারণে এটা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। তখন কেউ মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে নাম ও পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক নুরুন্নবীর স্বজনরা দাবি করেছেন, এ ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতাদের সহযোগিতা রয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত হলে তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

নাহিদুজ্জামান মণ্ডল সৌরভের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এ প্রসঙ্গে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম