Logo
Logo
×

সারাদেশ

খুলনা শ্রম দপ্তরের সাবেক পরিচালক

ক্ষমতার দাপটে মিল দখল ও পরিচালকের পদ বাগিয়ে নেন মিজানুর

Icon

নূর ইসলাম রকি, খুলনা

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৩৭ পিএম

ক্ষমতার দাপটে মিল দখল ও পরিচালকের পদ বাগিয়ে নেন মিজানুর

সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী  ও খুলনা-৩ আসনের সংসদ-সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের আস্থাভাজন হিসাবে ১৭ বছর ‘রাজত্ব’ করেছেন খুলনা বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের সাবেক পরিচালক মিজানুর রহমান।  

ক্ষমতার দাপটে গত বছর জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে পরিচালকের পদটিও বাগিয়ে নিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি মিল দখল, বাড়ি নির্মাণ, ঘুস ছাড়া কাজ না করা, অফিসের কর্মচারীদের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত শুরু হয়েছে।

খুলনার অ্যাজাক্স জুট মিলের চেয়ারম্যান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা মিজানের বিরুদ্ধে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। 

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, খুলনা-৩ আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের আস্থাভাজন হিসাবে মিজানুর রহমান খুলনায় ১৭ বছর ধরেই ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তিনি অ্যাজাক্স জুট মিলটি দখলে সহযোগিতা করেছেন। মন্নুজান সুফিয়ানের ভাই শাহাবুদ্দিন এবং খানজাহান আলী ও থানা যুবলীগ নেতা সাজ্জাদুর রহমান লিংকন বছরের পর বছর মিলটি নিজেদের কবজায় রেখেছেন। 

মিজানুর রহমান মুজগুন্নি এলাকায় একটি প্লট নিয়ে সেখানে নির্মাণ করেন বহুতল ভবন। মিজানের মা এবং স্ত্রীর নামে ব্যাংকে বড় অঙ্কের এফডিআর ছাড়াও শ্বশুরবাড়ির লোকদের নামে তার বিরুদ্ধে ঢাকায় বেনামে ফ্ল্যাট ক্রয়ের অভিযোগও রয়েছে। এছাড়া প্রতিমন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ১৫ জনকে টপকে উপপরিচালক থেকে পরিচালক পদে পদোন্নতিও নিয়েছেন। সাবেক প্রতিমন্ত্রীর পুত্র সেজে তিনটি গাড়ি ব্যবহার করতেন মিজান। এছাড়া অফিসের দুইজন কর্মচারীকে তিনি অফিসের কাজের বাইরে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কাজে ব্যবহার করতেন।

৫ আগস্টের পর মিজানুর রহমানের নানা অনিয়ম নিয়ে শ্রম দপ্তর অবরোধ এবং জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন খুলনার শ্রমিকরা। পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও মিজানের স্বেচ্ছাচারিতার বিচার চেয়েছেন। পরে ৯ অক্টোবর মিজানুরকে গাজীপুরের টঙ্গী শিল্প সম্পর্ক শিক্ষায়তনে বদলি করা হয়। 

এর আগে মিজানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুনির হোসেন খানের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে ৮ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্তের জন্য অতিরিক্ত সচিব খুলনা সফর করেছেন।

এ বিষয়ে মিজানুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আজগুবি অভিযোগ করা হয়েছে। অ্যাজাক্স মিল থেকে মাসে ২ লাখ টাকা নেওয়ার বিষয়টি কখনোই সম্ভব নয়। যে বাড়ির কথা বলা হচ্ছে, সেটি তার স্ত্রীর সরকারি চাকরির লোনের টাকায় করা। পদোন্নতির বিষয়ে কোনো প্রভাব দেখানো হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী সব হয়েছে। সাবেক প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের বাড়ি খুলনায় এবং তিনি এখানে দায়িত্ব থাকায় সখ্য ছিল। এর বাইরে আর কোনো সম্পর্ক নেই। আপাতত এসব বিষয়ে আর কথা বলতে চাচ্ছি না। তদন্ত হলেই সব জানা যাবে। আমি আমার ব্যাখ্যা তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জানাব।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম