২ সপ্তাহেও প্রেমিকের বাড়ি থেকে মেয়েকে আনতে পারছেন না বাবা-মা
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৪ পিএম
ভৈরবে বিয়ের দাবিতে ২ সপ্তাহ যাবত প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করছেন প্রেমিকা। তার বাবা-মা অনেক চেষ্টার পরও মেয়েকে বাড়িতে ফেরাতে না পেরে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। ঘটনাটি এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে পৌর শহরের চণ্ডিবের উত্তর কান্দাপাড়া এলাকার শাহজাহান মিয়ার বাড়িতে। প্রেমিক নাদিম মিয়া (২৬) ওই এলাকার শাহজাহান মিয়ার ছেলে। প্রেমিকার (১৮) বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে।
এদিকে প্রেমিকা আসার খবরে প্রেমিক নাদিম ২ সপ্তাহ যাবত লাপাত্তা হয়ে আছে। বন্ধ করে রেখেছে তার মোবাইল।
মেয়ের এমন কাণ্ডে বাবা ও মা বুধবার দুপুরে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) রিদুওয়ান আহমেদ রাফির কাছে ছুটে যান।
জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত নাদিমের সঙ্গে অফরিনের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ১৫ দিন যাবত নাদিমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে ভৈরবে তাদের বাড়িতে চলে আসেন মেয়েটি। অবস্থান নেন প্রেমিকের চাচার ঘরে।
সামাজিকভাবে এটি সমাধান করতে পারেনি কেউ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও দুই পরিবারের সাথে কথা বলে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
মেয়েটির বাবা বলেন, প্রথমদিকে ছেলের বাবা রাজি থাকলেও এখন প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় স্থানীয়দেরও হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। আমরা চাই প্রশাসনের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হোক। আমাদের এলাকার মানসম্মান যেন নষ্ট না হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ইলিয়াস মিয়া জানান, ইউএনও ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আসার পর আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিল তদারকি করতে। গত ২২ অক্টোবর রাতে এসে ইউএনও পরদিন ২৩ অক্টোবর দুপুর ১২টার মধ্যে বিয়ে দিয়ে দিতে বলে যান। আমি স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে বিষয়টি সমাধান করতে যাই। প্রথমদিকে ছেলের পরিবারের সম্মতি থাকলেও এখন রাজি নয়। বরং আমাকে হুমকি-ধমকিও দিচ্ছেন।
এদিকে সরেজমিন প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায় ছেলের বাবা শাহজাহান মিয়াকে। প্রথমে সাংবাদিকদের দেখে অসদাচরণ করেন তিনি। কথা বলতে রাজি হননি। পরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, আমার সঙ্গে দুই মাস যাবত ছেলের কোনো যোগাযোগ নেই। মেয়েটি পরিকল্পিতভাবে আমাদের বাড়িতে এসেছে। মেয়ের পরিবার আমার কাছে বড় অঙ্কের টাকা দাবি করেছে। স্থানীয় কিছু প্রতারক আমার জমি কেড়ে নিতে মেয়েটিকে লেলিয়ে দিয়েছে। আমার ছেলে যদি কোনো অপরাধ করে থাকে, তাকে খুঁজে বের করে বিয়ে করিয়ে দিন। আমার জমি নিয়ে মামলা মোকাদ্দমা চলছে। একটি চক্র সমাজে আমাকে অসম্মান করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।
এ বিষয়ে নাদিমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করতে চাইলেও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিদুওয়ান আহমেদ রাফি বলেন, আমি দুই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের কথা বলে দিয়েছিলাম। এখনো তারা কোনো সমাধান করতে পারেনি। মেয়েটির বাবা আমার কাছে এসেছিলেন। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মেয়ের পরিবারকে জানিয়ে দিয়েছি।