জমির বিরোধে ভাগ্নেকে কুপিয়ে হত্যা মামার
বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:০৫ পিএম
বাগেরহাটের কচুয়ায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছেন আপন মামা আব্দুর রব, কবির ও তাদের লোকজন। নিহত পলাশ শেখ (৩৬) কচুয়া উপজেলার চন্দ্রপাড়া গ্রামের আফজাল শেখের ছেলে। তার স্ত্রী, এক মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাতে উপজেলার ফতেপুর বাজারে প্রথমে তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
পরে পলাশকে উদ্ধার করে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় থানা পুলিশ। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অভিযুক্ত সাবেক সেনাসদস্য আব্দুর রব চন্দ্রপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও কচুয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি। কবির হোসেন স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি।
নিহতের মা হেলেনা বেগম বলেন, বাবার বাড়িতে পাওয়া প্রায় দেড় বিঘা জমি জাল দলিল করে আমার ভাই বিএনপি নেতা আব্দুর রব ও কবির জাল দলিল করে নিয়েছেন। এই জমি ফেরত চাওয়াকে কেন্দ্র করে ভাইদের সঙ্গে আমাদের পরিবারের বিরোধ ছিল।
তিনি বলেন, সরকার পরিবর্তন হওয়ার পরে রব আমার ছেলেকে ডেকে তার সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন অপরাধ করিয়েছে। কয়েক দিন আগে জমি ফেরত চাইলে রব ও কবির আমার ছেলে পলাশকে বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করে। গতকালও আমার ছেলে বাড়িতে ছিল।
হেলেনা বেগম বলেন, স্থানীয় শিমুল কয়েকবার ফোন করে, কুমারগাড়িয়া ঘেরের (সরকারি জমিতে দখল করা ঘের) ভাগের টাকা দেওয়ার কথা বলে ডেকে নেয়। বাইরে থেকে আনা ৫ জন লোক এবং স্থানীয় অনেক লোককে দিয়ে রব ও কবির আমার ছেলেকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মেরে ফেলেছে।
তিনি বলেন, পরে পুলিশ খবর পেয়ে আমার ছেলেকে নিয়ে আসছে। আমি রব-কবির এবং যারা আমার ছেলেকে মেরেছে তাদের ফাঁসি চাই।
পলাশের স্ত্রী রিমা বেগম বলেন, আমার তিনটা ছেলে-মেয়ে। আমার বাবা-মা নেই, শ্বশুর-শাশুড়িও বৃদ্ধ। একটু জমির জন্য আপন ভাগ্নেকে মেরে ফেলল রব-কবির, আমি এখন কোথায় যাব।
স্থানীয় একজন বাসিন্দা বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর রব ও কবির এলাকাকে অশান্ত করে ফেলেছে। এমন কোনো অপরাধ নেই তারা করে না। কচুয়ার মানুষের শান্তির জন্য তাদের এখনই থামানোর দাবি জানান তিনি।
কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মনি শংকার পাইক বলেন, গতকাল রাতে মৃত অবস্থায় একজন মারধরের রোগী নিয়ে আসা হয়েছিল। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।
কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুল আলম বলেন, হত্যার কারণ অনুসন্ধানে কাজ শুরু হয়েছে।