মেহেদির রং মোছার আগেই প্রতিপক্ষের ছুরিতে প্রাণ গেল প্রবাসীর
নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৫৭ পিএম
কয়েক দিন আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন সৌদি আরব প্রবাসী যুবক সোহান আহমদ। এখনো হাত থেকে মেহেদির রং যায়নি সোহানের। পূরণ হয়নি স্ত্রীকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার স্বপ্ন, মেহেদির রং মোছার আগেই প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন সোহান আহমদ (২৩)।
সোমবার সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ বাজারে প্রতিপক্ষের হামলায় মৃত্যু হয় সোহান আহমদের। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুইজন।
নিহত সোহান ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে। আহতরা হলেন- সোহানের চাচাতো দুই ভাই নুর আলমের ছেলে মোসাদ্দেক আলম (২৪) ও আবু সায়েদের ছেলে শহীদুল্লা (২৫)। আহতদের মধ্যে মোসাদ্দেকের অবস্থাও সংকটাপন্ন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুই সপ্তাহ পূর্বে সৌদি আরব থেকে দেশে আসেন ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের সিরাজ মিয়া ছেলে সোহান আহমদ। এক সপ্তাহ আগে স্বপ্নের দেশ যুক্তরাজ্যে যাওয়ার জন্য পাঞ্জারাই গ্রামে বিয়ে করেন সোহান। স্বপ্ন ছিল স্ত্রীসহকারে যাবেন স্বপ্নের দেশ যুক্তরাজ্যে; কিন্তু স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল সোহানের।
সোমবার সন্ধ্যায় ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের উমরপুর গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের পুত্র নুরকাছ ও তার সহযোগীদের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে সোহানের বাগবিতণ্ডা ঘটে। পরে সোহানের ওপর হামলা চালায় নুরকাছ ও তার সহযোগীরা। একপর্যায়ে মারামারি থেকে বাঁচতে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন সোহান।
কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি; ইনাতগঞ্জ বাজারের গলিতে ফেলে প্রকাশ্যে নুরকাছ ও তার সহযোগীরা ধারালো ছুরি দিয়ে সোহানকে একাধিক জখম করে। এ সময় সোহানকে বাঁচাতে মোসাদ্দেক ও শহীদুল্লা এগিয়ে এলে তাদেরও ছুরিকাঘাত করা হয় ।
গুরুতর আহত অবস্থায় সোহান ও মোসাদ্দেককে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অপর আহত শহীদুল্লাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোহানের মৃত্যু হয়। বিয়ের মেহেদির রং মোছার আগেই সোহানের চলে যাওয়ার ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও নিহত সোহানের চাচা মাসুদ আহমেদ জিহাদী বলেন, আমার ভাতিজাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, হত্যাকারীরা এলাকায় নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, প্রতিনিয়ত তারা অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, এর আগেও একাধিকবার অপরাধ কর্মকাণ্ডে তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়, হত্যাকাণ্ডের স্থান জগন্নাথপুর থানা এলাকায়।