মিঠাপুকুরে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে যুবক নিহত
মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৪৭ পিএম
প্রতীকী ছবি
চুরি করতে বাধা দেওয়ায় এক নারীকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতকারীরা। এ ঘটনায় চোর সন্দেহে এক যুবককে গণপিটুনি দেয় লোকজন। এতে ওই যুবক মৃত্যুবরণ করেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমে পাঠিয়েছে। অন্যদিকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রংপুরের মিঠাপুকুরে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই যুবকের নাম আইনুল ইসলাম (৩৫)। তিনি উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ধলারপাড়া গ্রামের মৃত. নুরু মিয়ার ছেলে। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ভবঘুরের মতো চলাফেরা করতেন এবং তার স্ত্রী-সন্তান ও পরিবার নেই বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের বড় মির্জাপুর গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চুরি করতে যায় দুষ্কৃতকারীরা।
এতে বাধা দেওয়ায় আবদুস সাত্তারের স্ত্রী মনজুয়ারা বেগমকে (৬০) এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে চোরেরা। এ সময় তার চিৎকারে গ্রামের লোকজন ঘটনাস্থলে চলে আসলে চোর পালিয়ে যায়।
পরে ওই নারীকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি চোরকে চিনতে পেরেছেন বলে স্থানীয়দের জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রাত সাড়ে ১২টার দিকে পাশের গ্রাম ধলারপাড়ার বাড়ি থেকে আইনুলকে তুলে নিয়ে যান বড় মির্জাপুর গ্রামের লোকজন। এরপর বেধড়ক মারপিট করা হয়। এতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
বড় মির্জাপুর গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলেন, আইনুল ইসলাম খুব খারাপ প্রকৃতির লোক। তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। সে সব সময় নেশাদ্রব্য সেবন করে মাতলামো করে ঘুরে বেড়ায়।
এলাকাবাসী বলেন, ‘আয়নাল রাতে গরু চুরির উদ্দেশ্যেই মনজুয়ারার বাড়িতে গিয়েছিল; কিন্তু বাধা দেওয়ায় সে মনজুয়ারাকে ছুরিকাঘাত করে। খবর পেয়ে উত্তেজিত লোকজন তাকে ধরে মারপিট করে। ’ তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী মিষ্টি বিতরণ করেন।
এদিকে নিহতের মা বুল্লি বেওয়া বিলাপ করতে করতে বলেন, বাবা- মোর ব্যাটার কোনো দোষ নাই। তারা সাক্ষী-প্রমাণ ছাড়াই ধরি নিয়া মারডাং করছে। মারডাং খায়া ব্যাটা মরি গেইলো। মুই ইয়ার বিচার চাও।
মিঠাপুকুর থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, গণপিটুনিতে নিহত ব্যক্তিই চুরি করতে গিয়ে মনজুয়াকে ছুরিকাঘাত করে। এ ঘটনায় কেউ থানায় মামলা দেয়নি। জিডি করে লাশ পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে মামলা করলে পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।