অর্থ সংকটে আশুগঞ্জ স্টিল রাইস সাইলোর নির্মাণ কাজ বন্ধ
যুগান্তর প্রতিবেদন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৪৫ পিএম
অর্থ সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি খাদ্যশস্য সংরক্ষণাগার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ স্টিল রাইস সাইলোর নির্মাণ কাজ।
বিলের অর্থ ছাড় না হওয়ায় প্রায় এক মাস ধরে কাজ বন্ধ রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন। কবেনাগাদ কাজ শুরু হবে- সেটি স্পষ্ট না হওয়ায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্প নিয়ে। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৮ শতাংশ।
স্টিল রাইস সাইলোটিতে স্বয়ংক্রিয় তাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের মাধ্যমে আদ্রতা এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ২ বছর পর্যন্ত চালের পুষ্টিগুণ অটুট রেখে সংরক্ষণ করা যাবে। সংরক্ষিত চাল প্যাকেটজাত এবং বস্তাবন্দি করতে ঘণ্টায় ৫০০ টন স্পিডের বেল্ট কনভেয়িং এবং চেইন কনভেয়িং ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের মেঘনা নদীরপাড়ে ১ লাখ ৫ হাজার টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন স্টিল রাইস সাইলোর নির্মাণের জন্য ২০১৮ সালে তমা কনস্ট্রাকশনের সঙ্গে খাদ্য অধিদপ্তরের চুক্তি হয়। আর প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২ বছর। তবে করোনা মহামারিসহ নানা সংকটে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা যায়নি। আধুনিক এ সাইলোটিতে ৩০টি বিন রাখা হয়েছে। একেকটি বিনে সংরক্ষণ করা যাবে ৩ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চাল।
চতুর্থ দফায় বাড়ানো মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ডিসেম্বরে। সাইলোটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৫৪০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। সাইলোর সব বিন তৈরির কাজ শেষ হলেও এখনো বাকি বাল্ক ট্রাক রিসিভিজ, টপ সাইলো স্টিল স্ট্রাকচার, অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণ ও ট্রাক পার্কিং ইয়ার্ডের কাজ। এ অবস্থায় বিলের অর্থ ছাড় না হওয়ায় কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
জানা যায়, প্রতি মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে বিপুল পরিমাণ ধান ও চাল সংগ্রহ করে খাদ্য বিভাগ। সংগৃহীত এসব ধান-চাল রাখা হয় খাদ্যগুদামগুলোতে। আর জেলার খাদ্যগুদামগুলোর ধারণক্ষমতা ২১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। বর্তমানে জেলার আশুগঞ্জে একটি সাইলো আছে। এটিতে গম সংরক্ষণ করা হয়। আর ধান ও চাল সংরক্ষণ করা হয় খাদ্যগুদামে। তবে জেলায় প্রতি মৌসুমে যে পরিমাণ ধান ও চাল সংগ্রহ করা হয়- বিতরণের পর বিপুল পরিমাণ উদ্বৃত্ত থাকে। জায়গা সংকুলান না হওয়ায় উদ্বৃত্ত চালগুলো সংরক্ষণের জন্য পাঠানো হয় চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলার খাদ্যগুদামে।
তমা কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলী মো. নিশাত হোসাইন জানান, সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই বিলের অর্থ ছাড়ে বিলম্ব হচ্ছে। ফলে সংকটে কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। এ অবস্থায় নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হবে না। ফলে আরও ৬ মাস প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হবে।