Logo
Logo
×

সারাদেশ

বেড়িবাঁধ ভেঙে সাগরে তলিয়ে গেছে মসজিদ

Icon

কুতুবদিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪২ পিএম

বেড়িবাঁধ ভেঙে সাগরে তলিয়ে গেছে মসজিদ

কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের সাইটপাড়া এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে একটি মসজিদের অর্ধেক স্থাপনা সাগরে তলিয়ে গেছে। এই এলাকার প্রায় ৬০০ মিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ৪০০ মিটার বেড়িবাঁধ এখনো অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে।

বেড়িবাঁধ রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) গত মাসে ডাম্পিং করে জিওব্যাগ দিয়েছিল; কিন্তু ডাম্পিং কাজে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের চরম অবহেলার কারণে এক মাস শেষ না হতেই জিওব্যাগগুলো জোয়ারের পানিতে সাগরে তলিয়ে গেছে। দ্রুত সময়ে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা না হলে পুরো এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিন দেখা যায়, কুতুবদিয়া উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের কূল ঘেঁষা ছোট্ট একটি গ্রামের নাম সাইটপাড়া। এই গ্রামে ১৫০ পরিবারের মধ্যে প্রায় দেড় হাজার মানুষের বসবাস। ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জীবন পার করছেন তারা।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) অর্থায়নে গেল গত মাস আগে ৬০০ মিটারের এ বাঁধে কিছু কিছু অংশে দুয়েকটি করে জিও ব্যাগ দেওয়া হয়েছিল। এক মাস শেষ হতেই এসব ব্যাগ তলিয়ে গেছে সাগরে। মসজিদের উত্তর পাশে অন্তত ৩০০ মিটার এবং দক্ষিণ পাশে ১০০ মিটার বেড়িবাঁধ অরক্ষিত অবস্থায় থাকার কারণে যেকোনো মুহূর্তে পূর্ণিমার জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকতে পারে। তবে মসজিদের পাশে জিওব্যাগ অল্প সময়ের ব্যবধানে সাগরের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে মসজিদটির সিংহভাগ অংশ ভেঙে সাগরে তলিয়ে গেছে। বাকি অংশে মানুষ নামাজ আদায় করছেন। তবে এ অংশেও ফাটল ধরেছে। যেকোনো সময় ওই অংশ ভেঙে সাগরে বিলীন হয়ে যাবে মসজিদটি। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং পূর্ণিমার জোয়ারের পানির সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে হয় এই এলাকার মানুষকে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে এই এলাকার মানুষের একটাই দাবি টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ। সরকার প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ করছে বেড়িবাঁধ রক্ষার জন্য। অথচ পাউবোর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোটি কোটি টাকার বরাদ্দ অনেকটা ভেস্তে যাচ্ছে। 

সাইটপাড়া মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি গাজী জাফর আলম যুগান্তরকে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব পালনে অবহেলার সুযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন নিম্নমানের কাজ করে। ফলে এক মাসের ব্যবধানেই নদীতে তলিয়ে যায় ডাম্পিং করা বালু-সিমেন্ট ভর্তি জিওব্যাগ। এতে করে তীর সংরক্ষণ কাজের সুফল নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন সাগরের কূলঘেঁষা বাসিন্দারা। 

কুতুবদিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও এলটন চাকমা বলেন, ওই এলাকায় বেড়িবাঁধের কিছু অংশে সাগরের পানি ঢুকার সম্ভাবনা ছিল। তাই জরুরিভিত্তিতে মসজিদের দুই পাশে সেসব অংশে জিওব্যাগ দেওয়া হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয় কিছু দুর্বৃত্ত জিওব্যাগ কেটে দেওয়ার ফলে সেগুলো সাগরের পানিতে তলিয়ে গেছে।

কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ সাদাত হোসেন যুগান্তরকে বলেন, মসজিদ ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছি। জেলা প্রশাসন পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দ্রুত সময়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন 

এ ব্যাপারে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদের মোবাইলে সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম