গোপনে আলীকদম ছাড়লেন আলোচিত ওসি
আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩৫ পিএম
বহুল আলোচিত সদ্যবিদায়ী অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার তবিদুর রহমান জনরোষ থেকে বাঁচতে গোপনে আলীকদম থানা ছাড়লেও তার আসবাবপত্রের গাড়ি আটকে দিয়েছেন ভুক্তভোগী লোকজন। লিখিত অভিযোগের পর থেকে টাকা ফেরত না দিয়ে সাবেক ওসি খন্দকার তবিদুর রহমানকে কর্মস্থল ত্যাগ করতে দেবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এর মধ্যে বুধবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ডিবি পুলিশের গাড়িতে করে গোপনে আলীকদম ত্যাগ করেছেন বলে পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়।
ভুক্তভোগী খোরশেদ আলম বলেন, সাবেক ওসি খন্দকার তবিদুর রহমান থাকায় আটকে রেখে মারধর ও মুক্তিপণ আদায় করেছেন। টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিলেও ডিবির গাড়িতে করে ওসি বান্দরবান চলে গেছেন ছাড়পত্র নিতে।
খোরশেদ আলম আরও বলেন, খন্দকার তবিদুর রহমান প্রায় ১০-১৫ লাখ টাকার ফার্নিচার নিয়ে গেছেন গত এক বছরের। এত টাকা পেল কোথায়?
গুরা মিয়া বলেন, শত শত মানুষকে ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ওসি খন্দকার তবিদুর রহমানের কাজ ছিল টাকা কিভাবে নিজের পকেটে নেওয়া যায় সে ধান্দায়। খন্দকার তবিদুর রহমানের সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সব অপরাধীর সঙ্গে ছিল মধুর সম্পর্ক। যার কারণে গত এক বছরের মাদকের কোনো অভিযান চলেনি থানা পুলিশের নেতৃত্বে।
এক গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, সদ্যবিদায়ী ওসি খন্দকার তবিদুর রহমানের আমলে বিভিন্ন সময় নির্যাতিত হয়েছে সাধারণ মানুষ। যাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ভাবে মুক্তিপণ আদায় করেছে। তারা খন্দকার তবিদুর রহমান যাওয়ার আগে তাদের থেকে জোরপূর্বক নেওয়া মুক্তিপণ ফেরত চেয়েছেন। টাকা না দিলে সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় খন্দকার তবিদুর রহমানের যেতে বাধা প্রদান করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবার। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গোপনে ডিবির গাড়িতে করে আলীকদম ছাড়েন খন্দকার তবিদুর রহমান।
এ বিষয়ে সদ্যবিদায়ী আলীকদম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার তবিদুর রহমানের মোবাইল ফোনে কল করে কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে বান্দরবান পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার জানান, অভিযোগের তদন্ত চলছে। সত্যতা প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, আলীকদম প্রেস ক্লাবের সামনে গত ১৬ অক্টোবর সচেতন আলীকদমের জনসাধারণ ও ছাত্র-জনতার ব্যানারে ভুক্তভোগীরা থানায় আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় ও মারধর করাসহ ওসির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেন। পাশাপাশি ওসি খন্দকার তবিদুর রহমানের বিরুদ্ধে আটকে রেখে টাকা আদায়, মিথ্যা মামলা, মারধরসহ লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। গত ১৭ অক্টোবর অভিযুক্ত ওসিকে এসবিতে বদলি করা হয়।