ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, অভিযুক্তদের চেনেন-ই না বাদী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৪৩ পিএম
মামলা
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানায় সম্প্রতি দুটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা দুটিতে দেশের অন্যতম রপ্তানিনির্ভর গার্মেন্ট শিল্প প্রতিষ্ঠান ফকির গ্রুপের তিন শীর্ষ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন-ফকির নিটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফকির আখতারুজ্জামান সিআইপি, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফকির মাশরিকুজ্জামান এবং ফকির ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফকির কামরুজ্জমান নাহিদ।
অথচ অভিযোগকারীরা অভিযুক্তদের চেনেন-ই না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারাদেশেই এ রকম বহু মামলা হচ্ছে। যেসব মামলায় বাদী অভিযুক্তদের চেনেনই না। মূলত পূর্ব আক্রোশ ও ব্যাক্তিগত ফায়দা হাসিলের উদ্দেশে এসব মামলা হচ্ছে।
তৈরি পোশাক শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা জানান, গার্মেন্ট সেক্টরের ব্যবসায়ীদের নামে এসব মামলার বেশিরভাগই হচ্ছে স্থানীয়দের জুট ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণ ও নতুন করে দখলকে কেন্দ্র করে। ব্যবসা না পেলে টার্গেট ব্যক্তির নামে মামলা করে দিচ্ছে সুযোগসন্ধানীরা।
আড়াইহাজার থানায় দায়ের হওয়া মামলার ক্ষেত্রেও প্রায় একই ঘটনা ঘটেছে। মামলা দুটির বর্ণনাও অনেকটা একই রকম। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, স্থানীয় একজন বিএনপি নেতা নেপথ্যে থেকে ফকির গ্রুপের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করিয়েছেন।
বিএনপি কর্মী শফিকুল ইসলামের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একটি মামলা করা হয়েছে। চলতি বছরের ১৯ জুলাই তার মৃত্যু হয়। তার স্ত্রী তাসলিমা আকতার ২১ আগস্ট আড়াইহাজার থানায় মামলাটি করেছেন। এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় অভিযুক্ত ফকির গ্রুপের তিনজনকে বাদী তাসলিমা চেনেন কিনা তা তিনি নিশ্চিত করতে পারেন নি।
ফকির গ্রুপের তিন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দ্বিতীয় মামলাটি দুপতারা ইউনিয়ন বিএনপির সহ সভাপতি বাবুল মিয়া হত্যার ঘটনায়। ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন তাসলিমার মামলার একদিন পর ২২ আগস্ট মামলাটি করেছেন। এই মামলায় ফকির গ্রুপের তিন কর্মকর্তাকে ১০ থেকে ১৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্তদের চেনেন কিনা এমন প্রশ্নে বাদী নুরুল আমিন গণমাধ্যমকে বলেন, আমার চেনার দরকার নেই।
ফকির গ্রুপের ব্যবস্থাপক সুমন কান্তি সিং জানান, স্থানীয় বিএনপির একটি অংশের আক্রশোর শিকার হয়েছেন ফকির গ্রুপের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা। ফকির গ্রুপ থেকে অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে তারা মামলা করেছে।
আড়াইহাজার থানার ওসি এহসান উল্লাহ মামলা দুটি গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, কেউ যদি নির্দোষ হয়ে থাকেন তদন্তে তা বেরিয়ে আসবে।
ফকির গ্রুপের এই তিন কর্মকর্তা প্রায় একই রকম তথ্য দিয়ে জানান, এসব মামলার কারণে তাদের ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
এর আগে গত ২১ অক্টোবর আইন ও সালিশ কেন্দ্রে চেয়ারম্যান জেড আই খান পান্না এ ধরনের একটি হত্যা মামলা থেকে জামিন পেয়েছেন। ওই মামলার বাদী স্বীকার করেছেন যে, তিনি ভুলবশত পান্নার নাম মামলায় দিয়েছেন, তিনি তাকে চেনেন না। তিনি পান্নার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নিয়েছেন।