কনস্টেবল দিয়ে গ্রেফতার বাণিজ্য!
মো. নুরুজ্জামান, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪০ পিএম
রাতের আঁধারে জেলেদের আটক করে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হরিরামপুর থানায় কর্মরত চারজন কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। তারা বলছেন- থানার ওসি তাদের পাঠিয়েছেন। অপরদিকে ওসির দাবি- তাদের কোনো ডিউটি দেওয়া হয়নি।
এ ঘটনায় ইতোমধ্যে করিম নামের এক কনস্টেবলকে মানিকগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। অন্য তিনজন একই অপরাধে অভিযুক্ত হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে হরিরামপুর থানার কনস্টেবল করিম, আব্দুল হাই, সোহেল এবং আরাফাত স্পিডবোট নিয়ে উপজেলার দড়িকান্দি এলাকায় গিয়ে পদ্মা নদী থেকে আলমাস এবং বাবু নামের দুই জেলেকে ইলিশ মাছসহ আটক করেন। এ সময় জেলে আলমাসের কাছ থেকে ১৮ হাজার টাকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
জেলে আলমাস বলেন, কনস্টেবল করিম আমার হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে বকাবাজি করে। পরে আমার কাছ থেকে ১৮ হাজার টাকা নিয়ে আমাকে ছেড়ে দেন এবং আমার জাল নিয়ে যান। এছাড়া আমার সঙ্গে থাকা বাবুকে চড় মারেন কনস্টেবল করিম। এ ঘটনায় কনস্টেবল করিমকে ক্লোজ করা হয়েছে।
কনস্টেবল করিম বলেন, ওসি স্যারের নির্দেশে আমি কনস্টেবল আব্দুল হাই, সোহেল আর আরাফাতকে নিয়ে নদীতে যাই। এ সময় আব্দুল হাই, সোহেল ও আরাফাত মিলে এক জেলেকে আটক করেন। জেলেদের নৌকায় টাকা লেনদেন হয়। আমাকে আব্দুল হাই বলে জেলে ৩ হাজার টাকা দিয়েছেন। আমার দায়িত্ব থানার স্পিডবোট চালানো। আমাকে যেতে বলেছে তাই আমি গিয়েছি।
হরিরামপুর থানায় গিয়ে কনস্টেবল আব্দুল হাইকে খোঁজ করেও পাওয়া যায়নি। তবে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
হরিরামপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মমিন খান যুগান্তরকে বলেন, এ ঘটনায় কনস্টেবল করিমকে ২১ অক্টোবর ক্লোজ করা হয়েছে। অন্যদের বিষয়ে তদন্ত চলছে।
ঘটনার সঙ্গে ওসির জড়িত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তো তাদের ডিউটি দেই নাই। কারণ তাদের ডিউটি দিলে সঙ্গে অফিসার থাকত।
এ বিষয়ে সিংগাইর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. নাজমুল হাসান যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তদন্ত চলছে। জেলেদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।