আশুগঞ্জে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সেবনে শিশু মৃত্যুর অভিযোগ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩০ পিএম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সেবনে আয়েশা মনি (০৪) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আয়েশা উপজেলার দুর্গাপুরের চাতাল শ্রমিক মো. খোকন মিয়ার মেয়ে।
এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হলে মঙ্গলবার দুপুরে আশুগঞ্জ পূর্ব বাজারের আল আমিন মেডিকেল সেন্টারের স্বত্বাধিকারী পল্লী চিকিৎসক মো. মোস্তাকিম বিল্লাহকে (২৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি সরাইল উপজেলার টিঘর গ্রামের মোতাসিম বিল্লাহর ছেলে।
এর আগে সোমবার রাতে নিহত শিশু আয়েশার পিতা খোকন মিয়া বাদী হয়ে ফার্মেসির মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ খেয়ে তার মেয়ে মারা গিয়েছে বলে আল আমিন মেডিক্যাল সেন্টারের স্বত্বাধিকারী পল্লী চিকিৎসক মো. মোস্তাকিম বিল্লাহকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সোমবার রাতে তার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি তাকে আশুগঞ্জ পূর্ব বাজারে অবস্থিত আল আমিন মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান। এ সময় ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী পল্লী চিকিৎসক মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ শিশুটির শরীর দুর্বল এবং পেটে কৃমি হয়েছে জানিয়ে তাকে একটি এক শ মিলি ভিনসিনা সিরাপ (১ চামচ করে দিনে ৩ বার), একটি এক শ মিলি আপেলিন সিরাপ (১ চামচ করে দিনে ২ বার) ও একটি ১০ মিলি বেন-এ সিরাপ (১ চামচ ৭ দিন পরপর) খাওয়ার জন্য ঔষধের প্যাকেটের গায়ে নির্দেশনা লিখে দেন।
উক্ত নির্দেশিকা অনুযায়ী শিশু আয়েশাকে ওষুধ খাওয়ানোর পর সে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার ফার্মেসি থেকে নেওয়া ওষুধগুলো দেখে এক শ মিলি আপেলিন সিরাপটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে বলে শিশুটির পরিবারকে জানান।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন জানান, নিহত শিশুর পিতা থানায় অভিযোগ দাখিল করলে প্যানেল কোড ১৮৬০ এর ৩০৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়। পরে নিহত শিশুর লাশ ময়না তদন্তের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় এবং অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক মো. মোস্তাকিম বিল্লাহকে গ্রেফতার করা করা হয়।
তবে আশুগঞ্জ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার নুপুর সাহা বলেন, নিহত শিশুকে সেবন করানো এক শ মিলি আপেলিন সিরাপটি মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও মৃত্যুর অন্য কারণও থাকতে পারে। শিশুটিকে সেবন করানো ওষুধগুলো জব্দ করে পরীক্ষার জন্য ঔষধ প্রশাসনের নিকট পাঠাতে পুলিশকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট ও ওষুধগুলোর পরীক্ষার রিপোর্ট এলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।