Logo
Logo
×

সারাদেশ

সমুদ্রে ভেসে যাচ্ছে কোটি টাকার সরকারি গাছ

Icon

নাসির উদ্দিন বিপ্লব, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী)

প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৪৯ পিএম

সমুদ্রে ভেসে যাচ্ছে কোটি টাকার সরকারি গাছ

বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, বালুক্ষয়, ভাঙনসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপড়ে পড়া সরকারি গাছ সাগরে ভেসে যাচ্ছে। বনবিভাগের উদাসীনতায় কোটি টাকা মূল্যের এসব গাছ সংরক্ষণের উদ্যোগ না থাকায় পর্যটকদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

সরেজমিন জানা গেছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ ঢেউয়ের ঝাপটায় ধুয়ে যাচ্ছে কুয়াকাটা সৈকতের বালু। সৈকত লাগোয়া বনাঞ্চলের কয়েক হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ পড়ে আছে সৈকতে। আকাশমণি, রেইনট্রি, ঝাউ, জাম, কেওড়া, সইলা, নারিকেল, তালগাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির মূল্যবান এসব গাছ সৈকতে উপড়ে পড়ে কোথাও বালুর নিচেও চাপা পড়েছে। কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টের পূর্ব দিকে কাউয়ারচর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার সৈকত জুড়ে বড়বড় গাছ পড়ে আছে। জোয়ারের পানিতে এই গাছগুলো গভীর সমুদ্রে ভেসে যাচ্ছে।

কুয়াকাটা সৈকতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রেজাউল করিম বলেন, কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে একটু পূর্ব দিকে এগিয়ে গেলে দেখা মিলবে বিভিন্ন রকম বড়বড় গাছ এলোমেলো ভাবে সৈকতে পড়ে আছে। কিছু গাছ ইতোমধ্যে বালুর নিচে চাপা পড়েছে। জোয়ারের পানির সঙ্গে অনেক গাছ ভেসে যাচ্ছে। গাছগুলো নিলামে দিলে সরকারের যেমন কোটি টাকা আয় হত, তেমনি বৃদ্ধি পাবে সৈকতের সৌন্দর্য।

স্থানীয় বাসিন্দা বৃদ্ধ মোতালেব মাঝি বলেন, কয়েক কিলোমিটার বনাঞ্চল ইতিমধ্যে সমুদ্রে বিলীন হয়ে গেছে।  আকাশমণি, রেইনট্রি, ঝাউ, জাম,  কেওড়া, সইলা, নারিকেল, তালগাছসহ কোটি কোটি টাকার গাছ বালুর নিচে চাপা পড়ে নষ্ট হচ্ছে। এসবের দিকে বনবিভাগের নজর দেওয়া উচিত।

জানা যায়, গত কয়েক দিনের সাগরের বিক্ষুব্ধ ঢেউয়ের তাণ্ডবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটকদের বিনোদন কেন্দ্রগুলো। হুমকির মুখে রয়েছে সৈকত লাগোয়া ট্যুরিজম পার্ক, মসজিদ, মন্দির, ট্যুরিস্ট পুলিশ বক্স ও বিশাল বনাঞ্চল। বর্তমানে দীর্ঘ ৩০ কিলোমিটার সৈকতে পর্যটকদের স্বাভাবিক চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলেও মন্তব্য ছিল পর্যটকদের।

ফরিদপুরের সালথা থেকে আসা জাকারিয়া ও রুমানা দম্পতি বলেন, সৈকতে যে সারি সারি গাছগুলো পড়ে আছে, এর কারণে সূর্যোদয় পয়েন্ট, লাল কাঁকড়াচর যাওয়াটা অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। গাছগুলো সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া দরকার।

পরিবেশবিদদের মতে জীববৈচিত্র্য রক্ষা করার জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা জরুরি।  প্রাকৃতিক পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে অনেক সময় হুমকির মুখে পরে উপকূলের বনাঞ্চল। 

এ বিষয় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, পর্যটন এলাকার লোকাল কমিউনিটির জন্য বিচ নরেসমেন্ট করা জরুরি। নরেসমেন্ট প্রসেসটা হলো রিকারিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে যে ধরনের প্লান্টেশন আছে এগুলো রক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। সবুজ গাছ প্রতিনিয়ত এভাবে ধ্বংস হতে থাকলে এটি উপকূলের জন্য হুমকি।

এ বিষয় পটুয়াখালীর উপ বিভাগীয় বনকর্মকতা মো. শফিকুল ইসলাম জানান, গাছগুলো ন্যাচারাল বেড়িয়ার হিসেবে কাজ করবে। সাগর প্রতিনিয়ত ভাঙছে এবং সাগরের ঢেউ প্রতিরোধ করে পাশাপাশি মাটির ক্ষয় রোধ করে। এই গাছগুলো অপসারণ বা নিলামে বিক্রি করা হবে না।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম