যুবদল কর্মী নিহত, শামীম ওসমানসহ সাবেক ৫ এমপির বিরুদ্ধে মামলা
সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫৭ পিএম
নারায়ণগঞ্জে শাওন আহম্মেদ (২২) নামে এক যুবদলকর্মী পুলিশের গুলিতে নিহতের ঘটনার দুই বছর পর নারায়ণগঞ্জের সাবেক পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেলকে প্রধান করে ও শামীম ওসমানসহ সাবেক ৫ এমপিসহ ৫২ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে নিহতের বড় ভাই মিলন মিয়া বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
সন্ধ্যা ৭টায় মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম।
মামলায় নারায়ণগঞ্জের সদ্য সাবেক পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেলকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৫ একেএম আসনের সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের নজরুল ইসলাম বাবু, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের গোলাম দস্তগীর গাজী, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের লিয়াকত হোসেন খোকাসহ ৫২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নগরের আলী আহাম্মদ চুনকা মিলনায়তনের সামনে থেকে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা একটি বিশাল র্যালি বের করেন। র্যালিটি নগরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় পৌঁছলে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ এবং পরে গুলিবর্ষণ করে। ঘটনার একপর্যায়ে ডিবি পুলিশের তৎকালীন এসআই মাহফুজুর রহমান কনক চায়নিজ রাইফেল দিয়ে একের পর এক গুলিবর্ষণ করলে যুবদল কর্মী শাওন আহাম্মদ গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। সেই সঙ্গে পুলিশের গুলিতে আহত হন বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের আরও ২৫ নেতাকর্মী।
মামলার বাদী মিলন মিয়া বলেন, আমার ভাই শাওন ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর সকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর র্যালিতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। এটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট একটি ঘটনা ছিল। কিন্তু পুলিশ ঘটনার পর প্রথমে আমার ভাইকে যুবলীগ কর্মী বানাতে চেয়েছিল। সেটিতে ব্যর্থ হয়ে ভাইয়ের মরদেহ আটকে রেখে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়। পরে জানতে পারি আমি নাকি বিএনপির পাঁচ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি। পরে আমি আদালতে মামলাটির বিষয়ে নারাজি দিলে পুলিশ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে বাধ্য হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই সময় আমার পরিবারকে পুলিশ জিম্মি করে রেখেছিল। যে কারণে আমি ওই সময় ভাই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারিনি। এখন দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছি। আশা করছি এ সরকারের আমলে ভাই হত্যার ন্যায়বিচার পাব।