ত্রিশ হাজার টাকা বেতনের কর্মকর্তা রাতারাতি কোটিপতি!
মো. নুরুজ্জামান, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৯ পিএম
ছোট চাকরিজীবীর বড় স্বপ্ন। ঘুস আর দুর্নীতির মাধ্যমে হয়েছেন কোটিপতি। গড়েছেন একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি। মানিকগঞ্জ শহরে কিনেছেন কোটি টাকার জমি। তিনি বর্তমানে মানিকগঞ্জের শিমুলিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে উপসহকারী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। তার আয়ের সঙ্গে নজিরবিহীন বৈসাদৃশ্য রয়েছে সম্পদের।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০০৩ সালে উপসহকারী কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন রাকিব হোসেন (রুস্তম)। এরপর তিনি জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি সরকারি দপ্তরের নেমপ্লেট ব্যবহার করে অবৈধ পন্থায় রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যান। তিনি হরিরামপুর উপজেলার চালা ইউনিয়নের আরমান মোল্লার ছেলে। তার বাবা একজন কৃষক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিনিয়র নায়েব বলেন, রাকিব ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেছেন। তিনি বর্তমানে ৩০ হাজার বা এর চেয়ে একটু বেশি বেতন পেতে পারেন। তবে এই পদে চাকরি করে দুইতলা বাড়ি আর মানিকগঞ্জ শহরে জায়গা কেনা সম্ভব না। তার হয়তো অন্য কোনো ব্যবসা বাণিজ্য থাকতে পারে।
স্থানীয়রা জানান, রাকিবের বাবা ছিলেন সাধারণ একজন কৃষক। ২০০৩ সালে তিনি ভূমি অফিসে চাকরি নেওয়ার পর থেকে তার ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটে। রাতারাতি হয়ে যান কোটিপতি। আমরা শুনেছি রাকিব নাকি ভূমি অফিসের অনেক বড় কর্মকর্তা। টাকাপয়সার মালিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাকিবের চরিত্রও বদলে যায়। রাকিব তার আপন চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া করে ধরে পড়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
রাকিবের (রুস্তমের) বাবা আরমান মোল্লা বলেন, আমি ঢাকায় কিছুদিন চাকরি করেছি। এরপর আমার কানে সমস্যা হওয়ার কারণে এলাকায় এসে কৃষি কাজ করি।
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপসহকারী রাকিব হোসেন যুগান্তরকে বলেন, আমি ২০০৩ সালে উপসহকারী পদে চাকরিতে যোগদান করি। এরপর নানা জটিলতায় আর প্রমোশন হয়নি।
তার বাড়ি আর সম্পদের মালিক হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনার সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো কথা বলব না।
শিবালয় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম ফয়েজ উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।