নারীসহ আ.লীগ নেতা আটক, ছাড়াতে বিএনপি নেতার দৌড়ঝাঁপ
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৪৬ এএম
কুমিল্লার লালমাইয়ে তিন সন্তানের জননীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে শাহ আলম নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছেন এলাকাবাসী। রোববার রাত ১০টার দিকে উপজেলার বেলঘর উত্তর ইউনিয়নের ভুশ্চি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আটক আওয়ামী লীগ নেতা ওই গ্রামের মৃত আলী হোসেনের ছেলে ও বেলঘর উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।
তিন লাখ টাকার বিনিময়ে তাকে থানা থেকে ছাড়াতে দৌড়ঝাঁপ করছেন এক বিএনপি নেতা।
ভুশ্চি গ্রামের আমিনুল ইসলাম জানান, গত ৩/৪ বছর ধরে আওয়ামী লীগ নেতা শাহ আলমের সঙ্গে একই গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী আবুল হোসেনের স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্ক চলছিল।
গ্রামের সবাই বিষয়টি জানলেও শাহ আলমের ক্ষমতার কারণে কেউ কিছু বলত না। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে গ্রামের যুবকরা প্রতি রাতে আবুল হোসেনের বাড়ির সামনে পাহারা শুরু করে।
রোববার রাত ৮টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা শাহ আলম নারীর ঘরে প্রবেশ করলে শতাধিক যুবক ওই বাড়ি ঘেরাও করে। এসময় কয়েকজন যুবক ঘরে ঢুকে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে শাহ আলমকে মারধর শুরু করে।
তখন ওই নারী বলতে থাকে, শাহ আলম ভাই তিন চার বছর ধরে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে আসছে। সবাই যেহেতু জেনে গেছে, এখন আমাকে বিয়ে করতে হবে।
প্রত্যক্ষদর্শী আনোয়ার হোসেন বলেন, নারীসহ আওয়ামী লীগ নেতা আটকের খবর পেয়ে ভুশ্চি ও আশেপাশের গ্রাম থেকে শত শত মানুষ ওই বাড়িতে আসে। বেশিরভাগ লোক শাহ আলমকে ঘর থেকে বের করে গণপিটুনি দিতে চায়।
বিষয়টি বুঝতে পেরে আমরা পুলিশকে জানাই। পরবর্তীতে রাত ১০টায় সেনাবাহিনীর ও পুলিশের দুটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা শাহ আলমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেলঘর উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতা বলেন, নারীসহ আওয়ামী লীগ নেতাকে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে দিয়েছে। শুনেছি পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের বিএনপির এক নেতা তিন লাখ টাকার বিনিময়ে তাকে থানা থেকে ছাড়াতে দৌড়ঝাঁপ করছেন।
ভুশ্চি বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম বলেন, নারীসহ শাহ আলম নামের একজনকে ভুশ্চিতে এলাকাবাসী আটক করেছে শুনে প্রথমে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়েছিলাম।
পরে পরিস্থিতি অবনতির আশংকায় সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়।
লালমাই থানার ওসি মো. শাহ আলম রাত সাড়ে ১২টায় বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা শাহ আলম ও নারীকে জনরোষ থেকে সেনাবাহিনীর সহায়তায় উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। উদ্ধার করা নারী শাহ আলমের বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।