দোহারে নাজমুল হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার
দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০৭ পিএম
‘ওরা মাদক ব্যবসা করত তাই আমার পোলারে মারছে। আমি রনির বিচার চাই। আমার মতো আর কারো মায়ের বুক যেন খালি না হয়'- এই বলে সংবাদ সম্মেলনে কান্নায় ভেঙে পড়েন দুবৃর্ত্তদের হামলায় নির্মমভাবে হত্যার শিকার নাজমুলের মা নাছিমা বেগম।
নাজমুল ছিল নাছিমার সংসারের আয় রোজগারের একমাত্র মাধ্যম। রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন নাজমুল। গত শুক্রবার সকালে ঢাকার দোহারে পূর্বশত্রুতার জেরে নাজমুল হোসেন (২৪) নামের ওই যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে দুবৃর্ত্তরা। নিহত নাজমুল উপজেলার রাইপাড়া ইউনিনের ইকরাশী গ্রামের আলী বেপারীর ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দোহারের বাঁশতলা বাজারে তারেক খানের দোকানে চা খেতে নাজমুলকে ডেকে নেন তারই বন্ধু মিলন হোসেন। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে তিন যুবক এসে নাজমুলকে ধারালো ছোরা দিয়ে ঘাড়ে ও গলায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীরা তাকে উদ্ধার করে দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাজমুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে ওখানে থাকা মিলনকেও চর থাপ্পড় দেয় হামলাকারী রনি। তবে এটা তাদের পূর্বপরিকল্পিত সাজানো কিনা এমনটা ভাবছেন স্থানীয়রা। যেহেতু সে গ্রেফতার হয়েছে। এ ঘটনায় নাজমুলের মা নাছিমা বেগম বাদী হয়ে ওই রাতে পাঁচজনকে আসামি করে দোহার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। সন্দেহজনকভাবে ওই মামলায় আসামি করা হয় আহত মিলন হোসেনকে।
পুলিশ মিলনকে শনিবার গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে মিলন এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। সে জানায়, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী রনি মিয়া ওরফে রনি ডাকাত তাকে নাজমুলকে বাঁশতলায় ডেকে আনতে পাঠায়। এরপর কিছুক্ষণ পর রনিসহ দুইজন এসে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ার কারণেই নাজমুলকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিলন জানায়।
বাঁশতলা এলাকার একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এই এলাকায় চুরি ডাকাতি, মাদক ও খুনের স্বর্গরাজ্য। গত ৫০ বছরেও কেউ এই এলাকার অপরাধ নির্মূল করতে পারেনি। আমরা এটা হতে মুক্তি চাই। পুলিশ আসে পুলিশ যায় কিন্তু এদের কেউ দমাতে পারে না।
নিহত নাজমুলের ভাই মো. নাসিম বলেন, ওরা আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। দোহারের বাঁশতলা জামালচর রাইপাড়া, খেজুরবাগ, বটতলা, লষ্করকান্দা ও বিলেরপাড় এলাকায় মাদক বিক্রি করে রনি ও তার গ্রুপ। কেউ বাধা দিলেই তাকে জীবন দিতে হয়।
এ বিষয়ে দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রেজাউল করিম বলেন, হত্যায় জড়িত মিলনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তবে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী রনি মিয়া ওরফে ডাকাত রনিকে ধরতে অভিযান চলছে। রনি একজন দুর্ধর্ষ ডাকাত। তার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের ১৬টি মামলা রয়েছে দোহার থানায়।