Logo
Logo
×

সারাদেশ

ভর্তির শেষ দিন সোমবার

কব্জি দিয়ে লিখে স্বপ্ন জয়, বেরোবিতে সুযোগ পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত

Icon

গোলাম মাহবুব, চিলমারী (কুড়িগ্রাম)

প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০৩ পিএম

কব্জি দিয়ে লিখে স্বপ্ন জয়, বেরোবিতে সুযোগ পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত

জন্ম থেকেই দুই হাতে কোনো আঙুল নেই। তবুও অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে হাতের কব্জির সাহায্যে লিখতে শিখে। শত বাধা উপেক্ষা করে দুই হাতের কব্জির সাহায্যে লিখে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে দেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) পড়ার; কিন্তু অর্থাভাবে মেধাবী ছাত্রী প্রতিবন্ধী মিনারা খাতুনের শৈশব কালের সেই ইচ্ছা ভেস্তে যেতে বসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং পরের কয়েক বছর পড়ার খরচ জোগানোই এখন তার মূল চিন্তা।

কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলাধীন কাঁচকোল দক্ষিণ বাঁধ এলাকার দিনমজুর মো. রফিকুল ইসলাম ও মৃত মর্জিনা বেগমের মেয়ে মিনারা খাতুন। দুই বোনের মধ্যে মিনারা ছোট।

 জীবন যুদ্ধে হারতে নারাজ মিনারার দুই হাতের আঙুল না থাকলেও দুই হাতের কব্জির সাহায্যে লিখেই একে একে ৫ম শ্রেণির সমাপনী (পিইসি), জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) ও দাখিল পরীক্ষায় পাশ করে এইচএসসিতে কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হয়।

২০২২ সালে কারমাইকেল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ে সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি হয়। এবারে দ্বিতীয়বারের মতো রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পায় মিনারা।

ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েও শুধুমাত্র অর্থাভাবে স্বপ্নের বিদ্যাপীঠ বেরোবিতে ভর্তি হতে পারছে না মিনারা। ২১ অক্টোবর বেরোবিতে ভর্তির শেষ দিন। ভর্তির শেষ তারিখ ঘনিয়ে এলেও ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জোগান দিতে না পেরে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে মিনারার পরিবার।

মায়ের মৃত্যুর পর সাতবার নদীতে বাড়ি ভাঙনের শিকার বাবা রফিকুল ইসলাম মিনারার খালাকে বিবাহ করেন। শারীরিকভাবে মিনারা স্বাভাবিক থাকলেও তার দুই হাতে কোনো আঙুল নেই। দুই হাতের কব্জির সাহায্যে কলম ধরে সে এখন পর্যন্ত লেখাপড়া চালিয়ে আসছে।

বাবা রফিকুল ইসলাম দিনমজুর। নুন আনতে পানতা ফুরায়, অভাবের সংসার তার। নদী ভাঙনে পাউবো বাঁধে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। হঠাৎ পাউবো বাঁধে আশ্রিতদের বাড়ি ভেঙে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পরের জায়গার আশ্রয় নিয়ে কোনোরকমে পরিবার নিয়ে দিনাতিপাত তার। সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে মাসিক ৬০০ টাকা হারে বরাদ্দ হয় মিনারার নামে একটি প্রতিবন্ধী ভাতা। এ টাকায় চলত তার লেখাপড়ার খরচ।

ভর্তির জন্য কুড়িগ্রাম কলেজে পূর্বের ভর্তি বাতিল করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে প্রায় ২০ হাজার টাকা প্রয়োজন। এছাড়াও ভর্তি হয়ে শিক্ষা জীবনে বাকি পথ কিভাবে পাড়ি দেবে তা তার জানা নেই। মিনারার বাবা রফিকুল ইসলাম মেয়ের উচ্চশিক্ষার জন্য সমাজের বিত্তবান ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের সাহায্য সহযোগিতা কামনা করেছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম