মাদ্রাসাছাত্রের নির্যাতন থেকে মাকে বাঁচাতে গিয়ে লাশ হলো ছেলে
কুমিল্লা ব্যুরো
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৫১ পিএম
মাদ্রাসার বখাটে ছাত্রের লাঠির আঘাত থেকে মাকে বাঁচাতে গিয়ে দিনমজুরের ছেলে সাদ্দাম হোসেনের (১৬) মৃত্যু হয়েছে। ছেলের লাশ দেখে পিতার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।
শুক্রবার সকালে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের সাদকপুর হাজী বাড়িতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মধু ইসরাফিলের স্ত্রী ও আবুল কাসেমের স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-বিবাদের মধ্যে মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুড়িচং উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের সাদকপুর হাজী বাড়ির আবুল কাসেমের স্ত্রী শাহীনুর আক্তার (৪৫) শুক্রবার সকাল ৯টায় স্থানীয় দোকান থেকে বিস্কিট আনার জন্য দোকানে যাওয়ার সময় একই বাড়ির মধু ইসরাফিলের স্ত্রী সাবিনা আক্তার (৩০) ইয়ারকি মশকরা করলে দুজনের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক ঝগড়া-বিবাদের সৃষ্টি হয়। এই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে।
এ সময় মুধ ইসরাফিলের ছেলে সাদকপুর মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থী শ্রাবণ (১৭) লাঠি নিয়ে আবুল কাসেমের স্ত্রী শাহীনুর আক্তারকে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়। এ সময় তার ছেলে সাদ্দাম হোসেন (১৬) মাকে বাঁচাতে গেলে শ্রাবণ তাকে লাঠি দিয়ে জোরে একাধিক আঘাত করলে সাদ্দাম হোসেন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
স্থানীয় লোকজন মা ও ছেলেকে উদ্ধার করে প্রথমে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সাদ্দাম হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাদ্দামের মৃত্যু হয়।
শুক্রবার ভোররাতে বাড়ি নিয়ে আসা ছেলের লাশ দেখেই পিতা আবুল কাসেম হার্টঅ্যাটাক করলে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আবুল কাসেমের এক ছেলে সাদ্দাম হোসেন এবং এক মেয়ে রয়েছে। উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে দিশাহারা পরিবারটি।
বুড়িচং থানার ওসি মো. আজিজুল হক বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। থানায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে।