সেই জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম
যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশের জেরে অনুসন্ধানের পর কক্সবাজারের টেকনাফের ‘স্বঘোষিত ইয়াবা কারবারি’ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকারও বেশি অজ্ঞাত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশনের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বরাবর এ মামলা করা হয়। মামলার বাদী হলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের ঢাকার প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম।
এর আগে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর ‘শূন্য থেকে অর্ধশত কোটি টাকার মালিক জাহাঙ্গীর’ শিরোনামে দৈনিক যুগান্তরে প্রিন্ট ও অনলাইন ভার্সনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর তার বিষয়ে অনুসন্ধানে নামে দুদক।
জানা গেছে, ১০ বছর আগে জাহাঙ্গীর বেকারত্বের কারণে অসহায় জীবনযাপন করতেন। বর্তমানে রোহিঙ্গাদের পুঁজি করেই তিনি এখন রয়েছেন রাজা-বাদশার মতো। মাদক ও চোরাচালানের অর্থে তিনি গড়ে তুলেছেন বিশাল সাম্রাজ্য। থাকেন অট্টালিকায়। চড়েন আলিশান গাড়িতে।
স্থানীয়রা বলছেন, রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করেই জাহাঙ্গীর হয়ে গেছেন টাকার কুমির। অঢেল সম্পদ ও অর্ধশত কোটি টাকার মালিক। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাসীনদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে রাতের আঁধারে ইয়াবা এনে তিনি আজ এ বিত্ত-বৈভবের মালিক।
জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পূর্ব লেদা গ্রামে।
পুলিশ জানায়, ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফ পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ১০২ জন ইয়াবা কারবারি আত্মসমর্পণ করেন। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। এরপর দুটি মামলায় জাহাঙ্গীরসহ ১০২ জন কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়, তবে ২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক তাদের সবাইকে খালাস দেন।
দুদকের মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান করা হয়েছে। তদন্ত শেষে তাকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেওয়া হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি কমিশনে সম্পদ বিবরণী জমা দেন, যেখানে দেখা যায়, তিনি ২ কোটি ৮ লাখ ৪৫ হাজার ৬২৮ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এজন্য মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দুদকের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক অনিক বড়ুয়া মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।