Logo
Logo
×

সারাদেশ

দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-হাট দখলের অভিযোগে তদন্ত কমিটি

Icon

নলছিটি (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৪৩ পিএম

দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-হাট দখলের অভিযোগে তদন্ত কমিটি

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিসহ দুই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় ও হাট-বাজার দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দেওয়া ভিডিও বক্তব্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

অভিযুক্ত দুই নেতা হলেন- সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম খান ও কৃষক দল সভাপতি আ. সত্তার পিন্টু।

অভিযোগে জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর (৫ আগস্টের পর) বিএনপির ওই দুই নেতা ও তাদের দলীয় কিছু সমর্থক সুবিদপুর ইউনিয়নের তালতলা (ইউনিয়ন পর্যায়ে এ উপজেলার সবচেয়ে বড় বাজার) হাটের ইজারাদার ও তার লোকজনকে টোলের টাকা তুলতে না দিয়ে তারাই হাটের টোল তুলতে শুরু করেন। বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা আদায় করেন।

এদিকে এসব অভিযোগ তদন্ত করার জন্য উপজেলা বিএনপি গত ১৬ অক্টোবর ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ওই কমিটিকে সরেজমিন তদন্ত করে ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

সুবিদপুর ইউনিয়নের  তালতলা বাজারের মামুন নামের এক ক্ষুদ্র ফার্নিচার ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন- তালতলা বাজারের সরকারি খোলা স্টলে তাকে দোকান করে ২ বছর ব্যবসা চালানোর জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ওই দলের লোকজন ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। ওই ব্যবসায়ী তাদের ১০ হাজার টাকা দিয়ে সেখানে ব্যবসা শুরু করেন। ইতোমধ্যে দেড় বছর সেখানে তিনি ব্যবসা করেছেন। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির টুটুল নামের এক কর্মী তার কাছে টাকা দাবি করেন। পরে সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম খান তার দোকানে এসে ১০ হাজার টাকা কৃষক দল সভাপতি আ. সত্তার পিন্টুর কাছে দিতে বলেন।

ব্যবসায়ী মামুন বলেন, তার ব্যবসা খুব খারাপ চলছে। টাকা দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। প্রয়োজনে তিনি ব্যবসা বন্ধ করে অন্যত্র চলে যাবেন।

ওই সাক্ষাৎকারে মামুন আরও বলেন, তিনি শহিদ খানের দাবিকৃত ১০ হাজার টাকা দেননি।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিও সাক্ষাৎকারে অপর ব্যবসায়ী ও ওই বাজারের সাব-ইজারাদার (আংশিক) তৈয়ব আলী বলছেন, কৃষক দল সভাপতি পিন্টু স্থানীয় বিএনপি অফিসের কথা বলে তার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছেন।

সরেজমিন শুক্রবার ১৮ অক্টোবর সকালে ওই এলাকায় গিয়ে ব্যবসায়ী মামুনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানান, তার দোকান বন্ধ করে তিনি বাড়িতে গেছেন। ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি স্বরূপকাঠি উপজেলায়।

এ ব্যাপারে জানতে ব্যবসায়ী মামুনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

অপর ব্যবসায়ী তৈয়ব আলী জানান, ইউনিয়ন কৃষক দল সভাপতি পিন্টু তার কাছ থেকে চাপ প্রয়োগ করে ৫ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে তিনি (পিন্টু) ও তার লোকজন এসে ভয়ভীতি দিয়ে তারা চাঁদা নেয়নি বলে ভিডিওতে বক্তব্য দিতে বাধ্য করেন।

তিনি আরও বলেন, এতদিন হাটের টোলের টাকা তাদের উঠাতে দেয়নি তারা। এ বিষয়টি জানাজানি হলে এবং উপজেলা বিএনপি তদন্ত কমিটি গঠন করার পর ১৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার থেকে তাকে টোল উঠাতে বলেন পিন্টু।

তালতলা হাটের মূল ইজারাদার শাহিন খান জানান, ৬ লাখ টাকা সরকারি জমাসহ ৯ লাখ টাকা খরচ করে হাটের ইজারা নিয়েছি। কিন্তু ৫ আগস্টের পর সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতাকর্মী হাট দখলে নিয়ে তাকে টোল উঠাতে না দিয়ে তারা টোল উঠিয়েছেন। তিনি অসুস্থ থাকায় তার স্ত্রী নার্গিস বেগম উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম খান এবং কৃষক দল সভাপতি আ. সত্তার পিন্টু সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে দলীয় কিছু লোকজনই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ওই ব্যবসায়ীদের চাপ প্রয়োগ করে তাদের বক্তব্য রেকর্ড করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিয়েছে। ওই ব্যবসায়ীরা তাদের কাছে পরে তা স্বীকার করেছেন বলে জানান ওই দুই নেতা।

নলছিটি উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খান হেলাল জানান, বিভিন্ন মাধ্যমে এ বিষয়টি অবগত হয়ে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিকভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে কেউ ছাড় পাবেন না।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম