‘গর্ভের সন্তান নষ্ট না করলে স্বামীর গৃহে মিলবে না ঠাঁই’
গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৪৪ পিএম
‘গর্ভের সন্তান নষ্ট না করলে স্বামী গৃহে মিলবে না ঠাঁই’ অবিশ্বাস্য হলেও এমন ঘটনার অভিযোগ মিলেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে। ভুক্তভোগী পপি আক্তার এ ঘটনায় মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাকিল আহমেদের নিকট অভিযোগ দায়ের করেন।
তিনি উপজেলার অচিন্তপুর ইউনিয়নের মোবারকপুর গ্রামের মো. দুলাল মিয়ার কন্যা।
অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইউএনও মো. শাকিল আহমেদ। তিনি জানান, দুটি পরিবারের মাঝে বিরোধ তাদের নিয়ে একসঙ্গে বসা ও তদন্তের জন্য উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে দায়িত্বভার দেয়া হয়েছে।
পপি আক্তার যুগান্তরকে জানান, স্বামী সংসারে যেতে ‘নিজের পেটের সন্তানকে হত্যা’র শর্ত দিয়েছে। বাচ্চা নষ্ট করতে চাপ প্রয়োগ করছেন। বাচ্চা নষ্ট না করলে তিনি তার সংসারে আমাকে ঠাঁই দিবেন না।
তিনি আরও জানান, সে ডক্টর রেজাউল করিম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে একই গ্রামের নয়ন মিয়ার পুত্র মামুন মিয়া (৩০) তাকে নানাভাবে উত্যক্ত করত। এ নিয়ে দুবার সালিশ হলেও মামুন মিয়া পিছু ছাড়েনি। এক পর্যায়ে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয়। ১২ এপ্রিল ময়মনসিংহ নোটারি পাবলিকে বিবাহ সংক্রান্ত এফিডেভিট করেন। তারপরে স্থানীয় হুজুর ডেকে ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
এরপরে মামুন তাকে নিয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার শুরু করেন। ২১ সেপ্টেম্বর তারিখে প্রান্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গাইনি বিভাগের ডা. পারিসা মনি আল্টাসোনোগ্রাম করেন। রিপোর্টে দেখা যায়, গর্ভের সন্তানের বয়স ১৮ সপ্তাহ প্লাস।
পপি আক্তার জানান, গর্ভে সন্তান আসার পর থেকেই মামুন আমাকে নিয়ে নানা তালবাহানা করছে। এখন বলছে গর্ভের সন্তান নষ্ট করো, তারপরে বাড়িতে আসতে পারবা। আমি এতে রাজি না হওয়ায় সে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।
পপি আক্তারের বাবা দুলাল মিয়া জানান, আমার মেয়েকে যেহেতু বিয়ে করেছে, তাকে স্বামীর সংসারে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছি। কিন্তু ওদের পরিবার আমার মেয়েকে মেনে নিচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে মামুন মিয়া যুগান্তরকে বলেন, একটা এক্সিডেন্টের মাধ্যমে তার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছে। বলতে পারেন, এরপরে পরিবার থেকে আমাকে এক প্রকার ত্যাজ্যপুত্র করেছে। তবে পপি আক্তার আমার বিবাহিত স্ত্রী। তার পেটের সন্তান তো আমার সন্তান। তাকে মেরে ফেলতে বলব কেন? সে গর্ভবতী, সংসারের কাজ-কর্ম করতে পারবে না, তাই সে তার ইচ্ছায় ওর বাবার বাড়িতে গেছে। আমি তাকে আসতে বলছি, সে বলছে বাবার বাড়িতে থাকবে। এখন বিভিন্ন জায়গা নানা অভিযোগ দিচ্ছে।