দুর্নীতির অভিযোগে মাদ্রাসার মুহতামিমের পদত্যাগ
দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২০ পিএম
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রামপুর জামেয়া ইসলামিয়া কাসেমুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ মো. সালমান পদত্যাগ করেছেন।
সোমবার বিকালে মাদ্রাসার কার্যাালয়ে তিনি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন। এর আগে সকাল থেকে আশপাশের কয়েক গ্রামের লোকজন ও ছাত্ররা ওই মুহতামিমের পদত্যাগের দাবিতে মাদ্রাসায় তার অফিস ঘেরাও করে রাখে।
জানা যায়, ১৯৮৬ সালে দেবিদ্বার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রামপুর জামেয়া ইসলামিয়া কাসেমুল উলুম মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত মুহতামিমের দায়িত্ব গ্রহণ করেন হাফেজ মো. সালমান। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর মাদ্রাসায় একক আধিপত্য গড়ে তোলার মধ্যদিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় জড়িয়ে পড়েন। নিজের আধিপত্যকে টিকিয়ে রাখতে যখন যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে সেই সরকারের এমপি ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নেতাদের ছত্রছায়ায় মাদ্রাসাকে নিজের একক সমরাজ্যে পরিণত করেন। এছাড়াও শিক্ষার্থীর সঙ্গে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগে ২০১০ সালে জেলে যেতে হয় ওই মুহতামিমকে, পরে তিনি মামলায় নির্দোষ প্রমাণের মাধ্যমে খালাস পান।
এরপর মাদ্রাসায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী থেকে কমতে কমতে ৬০-৭০ জনে চলে আসে। তাই মাদ্রাসা রক্ষায় এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে সোমবার সকালে মুহতামিমের পদত্যাগের দাবিতে তার অফিস ঘেরাও করে রাখলে বিকালে তিনি পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করেন। পরে পুলিশ হেফাজতে মুহতামিমকে তার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।
স্থানীয় মেম্বার সফিকুল ইসলাম কালু বলেন, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী মাস্টার মাদ্রাসার সভাপতি হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির অনেক অবকাঠামোর উন্নত করেন। কিন্তু মাদ্রাসার অবস্থা যখন খারাপ হতে থাকে, তখন তিনি সব আয় ব্যয়ের হিসাব দেখতে চান। সালমান হুজুর হিসাব দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং স্থানীয় এমপির সহায়তায় জোরপূর্বক সভাপতি পদ থেকে রওশন আলী মাস্টারকে বাদ দেন। তিনি সব সময় নিজের পছন্দের লোকজন দিয়ে কমিটি করে নিজের অবস্থান শক্তিশালী রেখেছেন। তাই জনতার দাবির মুখে পদত্যাগ করে চলে গেছেন।
পদত্যাগী মুহতামিম হাফেজ মো.সালমান বলেন, আমি দাবির মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হই। কিন্তু আমাকে মাদ্রাসার হিসাব দেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। যাতে আমি হিসাব দেওয়ার মাধ্যমে নিজে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারি।
এ ব্যাপরে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিগার সুলতানা বলেন, ছাত্র-জনতার দাবির মুখে রামপুর মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ মো. সালমান পদত্যাগ করেছেন; এটি আমি শুনেছি। তবে লিখিত কোনো কাগজপত্র পাইনি।