এক ইউনিয়ন পরিষদে দুই চেয়ারম্যান!
রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৪৩ পিএম
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার রাজারহাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দুজন ব্যক্তি দাবি করায় বিপাকে পড়েছেন ওই ইউনিয়নের জনসাধারণ। বিঘ্ন ঘটছে নাগরিক সেবায়।
নিজেকে দাবি করা প্যানেল চেয়ারম্যান (ইউপি সদস্য) মো. শহিদুল ইসলাম ব্যাপারীর শাস্তির দাবিতে গত ৮ অক্টোবর চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক জেলা-উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৭ অক্টোবর থেকে চেয়ারম্যান মো. এনামুল হকের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে ওই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম ব্যাপারী নিজেকে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে দাবি করে পরিষদের সব নাগরিক সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। সেবা নিতে আসা নাগরিকদের জন্মসনদ ওয়ারিশ সনদসহ বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রমে তার স্বাক্ষর ও সিল ব্যবহার করছেন তিনি।
ইউপি চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক জানান, ইউনিয়ন পরিষদের রেজুলেশন অনুযায়ী গত ১৩ জুন ইউনিয়ন পরিষদের এক বিশেষ সভায় ১নং ওয়ার্ড সদস্য মো. আমজাদ হোসেনকে ১নং প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। অথচ শহিদুল ইসলাম ব্যাপারী কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জন্ম সনদ ও ওয়ারিশ সনদে স্বাক্ষর করে আসছেন।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে দীর্ঘদিন চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক তার কার্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। এতে পরিষদে সেবা নিতে আসা নাগরিকদের ভোগান্তির কথা উল্লেখ করে জেলা-উপজেলাসহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে ইউপি সদস্য মো. শহিদুল ইসলামের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. মশিউর রহমানকে আহবায়ক করে একটি তদন্ত টিম পরিষদ কার্যালয়ে আসে। তদন্তের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ এখনো শেষ হয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
এরই মধ্যে শহিদুল ইসলাম ব্যাপারী নিজেকে প্যানেল চেয়ারম্যান ঘোষণা করে বিভিন্ন নাগরিক সেবায় স্বাক্ষর করে আসছেন।
প্যানেল চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ব্যাপারীর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ইউপি নির্বাচনের পরে প্রথম মিটিংয়ে রেজুলেশন করে তাকে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়। চেয়ারম্যান অনুপস্থিত থাকায় ইউনিয়নের অনেকেই সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন। তাদের দিক বিবেচনা করে কাগজপত্র স্বাক্ষর করছেন বলে স্বীকার করেন তিনি।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মো. এনামুল হকের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আমি আগস্ট মাসের পর থেকে অফিসে কম যাই কিন্তু নাগরিক সেবাসহ অফিসিয়াল সব কাগজপত্রে নিয়মিত স্বাক্ষর করে আসছি। আমি সাময়িক বরখাস্তের কোনো চিঠি পাইনি তাহলে কিভাবে বুঝব যে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আশাদুল হক বলেন, আমি সদ্য দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই; তবে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ হাতে পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করব।