Logo
Logo
×

সারাদেশ

কুলাউড়ায় লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা ইটভাটার ইজারাদার

Icon

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৯ পিএম

কুলাউড়ায় লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা ইটভাটার ইজারাদার

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নে এমএনএইচ ব্রিক ফিল্ডের মালিকপক্ষ ৩ বছরের জন্য মানিক বর্ধনের কাছে ব্রিকফিল্ডটি ইজারা দেন।

এ সুযোগে ইজারাদার মানিক বর্ধন ইট বিক্রির নামে শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। প্রতারকের শাস্তি ও পাওনা টাকা উদ্ধারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগীরা। মালিকপক্ষ ও গ্রাহকের চাপে লাপাত্তা মানিক বর্ধন। প্রতারণার প্রতিকার চেয়ে থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন মালিকপক্ষ।

জানা গেছে, উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের হিংগাজিয়া এলাকায় অবস্থিত এমএনএইচ ব্রিকস ফিল্ডের স্বত্বাধিকারীরা হলেন নজিবুর রহমান, আলী হায়দার ও আহমদুর রহমান। তারা তিনজনই একই এলাকার বাসিন্দা। 

২০১৫ সালে অন্যতম স্বত্বাধিকারী নজিবুর রহমান শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের উভয়ের মতে ব্রিক ফিল্ডটি লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিষয়টি জানতে পেরে ব্রিকস ফিল্ডের ম্যানেজার মধ্য হিংগাজিয়া গ্রামের ভূপেন্দ্র বর্ধনের ছেলে মানিক বর্ধন ব্রিক ফিল্ডটি লিজ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

এ অবস্থায় স্বত্বাধিকারীদের পক্ষে নজিবুর রহমান বিগত ২০১৬ সালের ১ মে মৌলভীবাজার আদালতের অ্যাডভোকেট নিখিল রঞ্জন দাসের এফিডেভিটের মাধ্যমে তিন বছরের জন্য ১৫ লাখ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে চুক্তিবদ্ধে ইজারা দেন। 

মেয়াদান্তের পর মানিক বর্ধন পুনরায় লিজ নিতে চাইলে ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর হতে আরও ২ বছরের জন্য একই আইনজীবীর মাধ্যমে এফিডেভিট ও অঙ্গীকারনামা করে মানিক বর্ধনকে পুনরায় ইজারা দেন। অঙ্গীকারনামায় স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়, ইটভাটা পরিচালনা করতে যত ধরণের লাভ-লোকসান দেনাপাওনা সম্পূর্ণ দায়ভার মানিক বর্ধন নিজ দায়িত্বে বহন করবেন।

এদিকে মালিকপক্ষের অবর্তমানে ইজারাদার মানিক বর্ধন বিভিন্ন মানুষকে ইট দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা অগ্রিম তুলে নিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে গ্রাহককে ইট বা টাকা দিব দিচ্ছি বলে টালবাহানা শুরু করেন। 

গ্রাহকের কাছ থেকে মালিকপক্ষ বিষয়টি জেনে ইটভাটা সমিতির সভাপতি, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিসবাহুর রহমানের দ্বারস্থ হন। মালিকপক্ষ, লিজ গ্রহীতা ও ভুক্তভোগীদের নিয়ে ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়ন পরিষদে বৈঠকে বসেন তিনি। এ সময় ভুক্তভোগী গ্রাহকদের কথা শুনে তাদের টাকা ও ইট ধাপে ধাপে পরিশোধের জন্য মানিক বর্ধনকে কড়া নির্দেশ দেন ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি। এর কিছুদিন পরেই মানিক বর্ধন গা-ঢাকা দেন।

এমএনএইচ ব্রিকস ফিল্ডের অন্যতম স্বত্বাধিকারী নজিবুর রহমান জানান, ২০১৫ সাল থেকে আমি মেরুদণ্ডের চিকিৎসার জন্য ঢাকা ও ভারতে চিকিৎসাধীন ছিলাম। ২০১৮ সালে আমার হার্টে ব্লক ধরা পড়ায় ৪টি রিং লাগানো হয়। এরপর থেকে দীর্ঘদিন বিছানায় শয্যাশায়ী ছিলাম। এই সুযোগে মানিক বর্ধন গ্রাহকের টাকা দিয়ে না দিয়ে ধাপে ধাপে আমাদের ব্রিক ফিল্ডের ট্রাক্টর, ডিজেল ইঞ্জিন, কারেন্ট মোটরসহ যাবতীয় মালামাল বিক্রি করে পালিয়ে যান। 

পরবর্তীতে মালিকপক্ষ ও ভুক্তভোগীদের মামলায় মানিক বর্ধন গ্রেফতার হন এবং জেলহাজতে ছিলেন। জামিনে বেরিয়ে আবার পালিয়ে যান এবং তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এই মানিক বর্ধনের কারণে আমাদের ব্রিক ফিল্ডটি ধ্বংস হয়েছে আর আমরা হয়েছি নিঃস্ব। গ্রাহকরা মানিক বর্ধনকে না তাকে হেয় প্রতিপন্ন করছেন।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে মানিক বর্ধনের বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও বন্ধ রয়েছে। মানিক বর্ধন আত্মগোপনে রয়েছেন বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম