যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশের পর সাতকানিয়া ডাকঘরে সাফাই অভিযান
সাতকানিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:১২ পিএম
পরিত্যক্ত দেখাতে অযত্নে অবহেলায় ঝোপঝাড়ে ফেলে রাখা সাতকানিয়া উপজেলা ডাকঘর ভবনসহ আশপাশের আগাছা সাফাইয়ে নেমেছে ডাক বিভাগ। বুধবার বিশ্ব ডাকদিবসে ঝোপঝাড় বানিয়ে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কব্জায় ডাক বিভাগের ৩৬ শতক ভূমি দেওয়ার পাঁয়তারা নিয়ে যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগের।
‘উপজেলা ডাকঘরের ৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি বেহাতের আশঙ্কা’ শিরোনামে যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চার-পাঁচজন শ্রমিক ডাকঘর ও আশপাশের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় নামতে দেখা গেছে।
সাতকানিয়া উপজেলা ডাকঘর ও আশপাশের এলাকা নামমাত্র সাফাই কার্যক্রম চলতে দেখা গেছে। চট্টগ্রাম পূর্বাঞ্চলের পোস্টমাস্টার জেনারেল মো. ছালেহ আহমদ দৈনিক যুগান্তরকে বলেন, ‘সাতকানিয়া উপজেলা ডাকঘরের বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছি। তারা এখন থেকে পুরো বিষয়টি দেখভাল করবে। আর সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরুর জন্য অতিশিগগিরই আমরা ব্যবস্থা নেব।’
উপজেলা ডাকঘর অফিসের উপর তলায় পোস্টমাস্টারের বাসভবনটি আকাশ নামের স্থানীয় এক স্বর্ণকারকে অবৈধভাবে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। দৈনিক যুগান্তরের এই প্রতিবেদক সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে এর সত্যতা মিলে।
স্থানীয় লোকজন ডাকঘরের ঝোপঝাড় পরিষ্কার হতে দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে অভিযোগ করেন ডাকঘরের ভেতরে-বাইরের লোককে ভাড়া দেওয়া এবং প্রতি দিন ঘণ্টাব্যাপী গভীর নলকূপের পানি ট্যাংক থেকে অঝোরে পড়ে পানির অপচয় হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সাতকানিয়া থানা রোডে উপজেলা ডাকঘরের নতুন ভবন নির্মাণের পর অযত্ন আর অবহেলায় পরিত্যক্ত হয় পুরনো ভবন ও তার আশপাশ। ফলে আশপাশে থাকা ৩৬ শতক জমিতে চোখ পড়ে স্থানীয় একটি ডেভেলপার সিন্ডিকেটের। ওই সিন্ডিকেটটি স্থানীয় রাজনীতিবিদদের হাতে নিয়ে এসব সম্পত্তি কব্জায় নিতে ডাকভবন থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরে দৌড়ঝাঁপ করে।
তবে তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের নজরে এলে তাদের স্বপ্ন ভেস্তে যায়। তার নির্দেশে সার্ভে করে সীমানা প্রাচীরের প্রস্তাবনা যায় ঢাকায় ডাকভবনে। তবে সরকারের শেষমুহূর্ত হওয়ায় তা আর আগায়নি। পরে নতুন করে সরকার গঠনের পর ওই সিন্ডিকেটটি আবারও পুরোনো তৎপরতা শুরু করে। দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে তা আর বেশিদূর নিতে পারেনি ওই সিন্ডিকেটটি।
তবে এখনো পুরোনো কায়দায় নতুন কোন ‘চ্যানেল’ জায়গাটি গ্রাস করে নিতে পারে বলে শঙ্কা অনেকের। ডাক বিভাগের উপর মহল থেকে নিচ পর্যন্ত কর্তাব্যক্তিদের যোগসাজশে ভূমিখেকো সিন্ডিকেট যাতে ডাক বিভাগের অর্ধশত কোটি টাকার জমিজমা সম্পদ আত্মসাৎ করতে না পারে সেজন্য সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস ও ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের প্রতি এলাকাবাসী অনুরোধ জানান।