বগুড়ার বিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৭৫০ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৩ পিএম
বগুড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৭৪৯ জন শিক্ষক ও একজন অফিস সহকারী চাকরি করছেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশে এ তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তবে কোনো অভিযোগ না থাকায় এ তালিকায় কোনো ভুয়া নিয়োগ আছে কিনা তা যাচাইয়ের আগে কেউ বলতে পারছেন না।
বগুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) রেজোয়ান হোসেন এ তথ্য দিয়েছেন।
বগুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, গত আগস্টের শেষদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় শিক্ষক নিয়োগের তালিকা চাওয়া হয়। অপরদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ড. বিলকিস বেগম স্বাক্ষরিত পত্রে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর তালিকা চাওয়া হয়েছিল।
চিঠি পাওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পাওয়া শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর তালিকা দিতে জেলা ১২ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়।
এরপর বগুড়া জেলার ১২ উপজেলায় ৬০১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৭৪৯ জন শিক্ষক নিয়োগের তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে শিক্ষক- বগুড়া সদরে ১০৫ জন, গাবতলীতে ৮০ জন, শাজাহানপুরে ৭৭ জন, আদমদীঘি উপজেলায় ৭৬ জন, শেরপুরে ৭৩ জন, ধুনটে ৭১ জন, সোনাতলায় ৬৬ জন, সারিয়াকান্দিতে ৪৭ জন, শিবগঞ্জে ৪৩ জন, দুপচাঁচিয়ায় ৪২ জন, কাহালুতে ৪০ জন ও নন্দীগ্রামে ২৯ জন। এছাড়া গাবতলী উপজেলা শিক্ষা অফিসে একজন অফিস সহকারী নিয়োগের তথ্য পাওয়া যায়।
স্থানীয়রা জানান, বিগত সরকারের সময় অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাকে সনদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ওই সনদ দিয়ে অনেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি নিয়েছেন। সোনাতলা উপজেলার রানীরপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক কমান্ডার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সাতজনকে নিজের সন্তান সাজিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে।
দুদক বগুড়া কার্যালয় কথিত তিন সন্তানের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করে। প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তিনজনকে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পালিয়ে যাওয়া বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু সাইম জাহানের বিরুদ্ধে তার বাবা মৃত আকবর আলীর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ ব্যবহারের অভিযোগ উঠে। এছাড়া আকবর আলীর আরও তিন সন্তান ওই কোটায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) রেজোয়ান হোসেন জানান, শুরু থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটায় শিক্ষক পদে ৭৪৯ জন ও অফিস সহকারী পদে একজন নিয়োগ পেয়েছেন। এসব নিয়োগের তালিকা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তার কাছে তাদের ব্যাপারে কোনো অভিযোগ নেই। নির্দেশমতো তালিকা পাঠানো হয়েছে। ওই সব নিয়োগে কোনো ভুয়া আছে কিনা তা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার খতিয়ে দেখবেন।