পদ্মার চরের মানুষের একমাত্র ভরসা ডুঙ্গা
আমানুল হক আমান, বাঘা (রাজশাহী)
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:১৮ পিএম
রাজশাহীর বাঘায় পদ্মা নদীর চরে মানুষের একমাত্র ভরসা ডুঙ্গা। টিনের তৈরি এই ডুঙ্গা দিয়ে বর্ষা মৌসুমে যাবতীয় কাজ করেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা ডুঙ্গায় এক চর থেকে আরেক চরে যান।
পদ্মার মধ্যে উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নে ১১টি চর রয়েছে। এই চরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবার রয়েছে। নিচু এলাকায় বসবাসকারী প্রায় শতাধিক পরিবার বিভিন্ন উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
পদ্মার চরের মানুষের আয়ের প্রধান উৎস কৃষিকাজ। কয়েক দিনে পদ্মায় পানি বৃদ্ধির কারণে নিচু এলাকায় পানি উঠে ফসলি জমি ও বাড়িঘর ডুবে গেছে। এরমধ্যেই অনেকেই ডুঙ্গা নিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিবারের কাজ করছেন। নিচ পলাশিফতেপুর চরের লিটন ছাগল নিয়ে ডুঙ্গায় এক থেকে আরেক চরে যেতে দেখা যায়।
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে তিনি বলেন, আমার ছাগল অসুস্থ হলে পলাশফতেতপুর বাজারে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। ডাক্তার দেখিয়ে ডুঙ্গায় এসে ডুঙ্গায় বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। বর্ষা মৌসুমে ডুঙ্গা যাতায়াতের প্রধান বাহন।
চকরাজাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর আবদুর রহমান বলেন, আমার ওয়ার্ডের এক সপ্তাহের ব্যবধানে আতারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনের কারণে অন্যস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রায় শতাধিক পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে।
চৌমাদিয়া চরের ৫০ বছর বয়সের সলেমান হোসেন বলেন, পদ্মার চরের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র। বন্যাকে মোকাবেলা করে জীবন যাবন করতে হয়। টিনের তৈরি ডুঙ্গা নিয়ে পারিবারিকভাবে সব কাজ করি। বাড়িতে দুটি গরু আছে। গরুর খাদ্য সংগ্রহ করে ডুঙ্গায় নিয়ে যায়। বাড়ির মধ্যে পানি জমে আছে। কাজকর্ম নেই।
চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, পদ্মার পানি বৃদ্ধির কারণে চরের মানুষের নিচু জমির ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এদিকে ভাঙনে চরের শতাধিক পরিবার গৃহহারা হয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। তবে তারা গরু-ছাগল নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। চরের মানুষের একমাত্র ভরসা টিনের তৈরি ডুঙ্গা। চরের মানুষের কোনো প্রয়োজন হলে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ডুঙ্গায় যাতায়াত করে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মার চরে ইতিমধ্যেই ত্রাণ সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। আরও সহায়তা আসলে তাৎক্ষনিক সহায়তা প্রদান করা হবে।