নোয়াখালীতে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৩ এএম
ফাইল ছবি
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের চরকাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদে টাকার বিনিময়ে সুনামগঞ্জ জেলার চার নারীকে জন্মনিবন্ধন তৈরি করে দেওয়ায় চেয়ারম্যান মো. হানিফ সবুজ ও সাবেক সচিব মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার দুদকের সমন্বিত নোয়াখালী জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. জাহেদ আলম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় কোম্পানীগঞ্জের চরকাঁকাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মো. আনিছুল হকের ছেলে মো. হানিফ সবুজ এবং সাবেক সচিব ও চরকাঁকাড়া ইউনিয়নের আবুল বাসারের ছেলে মোয়াজ্জেম হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। মোয়াজ্জেম হোসেন বর্তমানে হাতিয়া উপজেলার চানন্দী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব হিসেবে কর্মরত।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল নোমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে লিখিত এজাহার পেয়ে টাকার বিনিময়ে অন্যায়ভাবে জন্মনিবন্ধন প্রস্তুতের অপরাধে মামলা রুজু করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, গত ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর নিজের ও চেয়ারম্যানের আইডি পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে চরকাঁকড়া ইউনিয়নের সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন তার বাসার ব্যক্তিগত কম্পিউটার থেকে তথ্য যাচাই না করে টাকার বিনিময়ে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার চার নারী মোছা. ছামিরা আক্তার, মোসা. রিমা আক্তার, মোছা. মাহমুদা বেগম, শেম্পা রাণী দাস জন্মনিবন্ধন তৈরি করে দেন।
এতে চেয়ারম্যানের আইডি পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন এ অপরাধ করলেও এ কাজে চেয়ারম্যান হানিফ সবুজের মোবাইল মেসেজের ওটিপি (ওয়ান টাইম পিন) নম্বরের প্রয়োজন ছিল। যা ব্যবহার করে জন্মনিবন্ধনগুলো তৈরি করা হয়েছিল। ফলে উক্ত ভুয়া জন্মনিবন্ধন তৈরিতে চেয়ারম্যান হানিফ সবুজের সম্মতি থাকার প্রমাণ পেয়ে মামলায় তাকেও আসামি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর তৈরি করা জন্মনিবন্ধন নিয়ে ওই চার নারী পার্শ্ববর্তী কবিরহাট উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়নের ন্যাশনাল আইডি কার্ড করার জন্য ছবি তুলতে গেলে কোম্পানীগঞ্জের চরকাঁকড়া ইউনিয়নের মো. হারুনের ছেলে আবু বক্কর ছিদ্দিন প্রকাশ সোহেলসহ তাদেরকে আটক করা হয়। পরে জন্মনিবন্ধনধারী নারী সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই থানার গাগোটিয়া গ্রামের আফছর আলীর মেয়ে মোছা. ছামিরা আক্তার বাদী হয়ে কবিরহাট থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরে গত ১৭ এপ্রিল এ ঘটনায় নোয়াখালী দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. জাহেদ আলমকে অনুসন্ধানী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গত ৮ সেপ্টেম্বর দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে মামলা রুজুর বিষয়ে অনুমোদন প্রদান করা হয়।
মামলার বাদী মো. জাহেদ আলম বলেন, ইউপি সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন ও চেয়ারম্যান মো. হানিফ সবুজ অসৎ উদ্দেশ্যে একে অপরের সহায়তায় অন্যায়ভাবে আর্থিক লাভের জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করে জন্মনিবন্ধত তৈরি করায় তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।