দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে দোহার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে অব্যাহতি
দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০১ পিএম
ঢাকার দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে তাকে প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয় ছাত্র-জনতা।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে দোহার উপজেলার জয়পাড়া কালেমা চত্বর থেকে উপজেলা প্রাঙ্গণ হয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় তার পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন বিক্ষোভকারী জনতা। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছান ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. জিল্লুর রহমান ও দোহার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রেজাউল করিম।
এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা সিভিল সার্জনের কাছে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনের বিষয়ে দায়িত্বে অবহেলা, স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে লিখিতভাবে তার পদত্যাগ দাবি করেন। পরে সিভিল সার্জন সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ডা. জসিম উদ্দিনকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়ার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. শহীদুল ইসলামকে দোহারে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনে নির্দেশ প্রদান করেন।
এ বিষয়ে দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. জসিম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর আমি দোহারবাসীর চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি। আজ তারা আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এটা আমার জন্য বড় দু:খের বিষয়। এ বিষয়ে আমার কিছুই বলার নেই।
ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. জিল্লুর রহমান বলেন, স্থানীয়দের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. জসিম উদ্দিনকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে, তারা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
উল্লেখ্য, গত বুধবার সন্ধ্যায় দোহার উপজেলার পৌরসভা খাড়াকান্দা এলাকার যুবক মো. আনোয়ার হোসেন বাড়ির পাশে একটি ডোবায় বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে যান। সেখানে বড়শিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন আনোয়ার। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সোহেল রানা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আনোয়ারের পরিবারের দাবি, বাড়িতে নিয়ে আসার পর সে হাত-পা ও চোখ নাড়াচাড়া করে। এমন অবস্থায় ফের আনোয়ারকে নেওয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের সঙ্গে এ বিষয়ে বাগবিতণ্ডা হয় রোগীর স্বজনদের। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা হাসপাতালের বহির্বিভাগে ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে জড়ো হন বিক্ষুব্ধরা।
দ্রুত সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনার পর থেকেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উত্তেজনা বিরাজ করে। বৃহস্পতিবার আন্দোলন করেন জনতা।