ধুনটে সাবেক এমপি আইজিপি ডিআইজিসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৬ পিএম
প্রতীকী ছবি
বগুড়ার ধুনট উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউর রহমান জ্যোতিকে প্রায় পাঁচ বছর আগে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক এমপি, আইজিপি, ডিআইজিসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
নিহতের ছেলে রওশন জামিল রাসেল গত ২৩ সেপ্টেম্বর বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে এ সংক্রান্ত কোনো মামলা থানায় রেকর্ড হয়েছে কিনা তা জানাতে ধুনট থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
ওসি সাইদুল আলম জানান, এ মামলা সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র সোমবার বিকাল পর্যন্ত হাতে পাননি।
মামলার অন্যতম আসামিরা হলেন- বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনের সাবেক এমপি হাবিবর রহমান, তার ছেলে ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফিস ইকবাল সনি, সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী, সাবেক ডিআইজি একেএম হাফিজ আক্তার, বগুড়ার সাবেক পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঁইয়া, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী, ধুনট থানার সাবেক ওসি ইসমাইল হোসেন, শেরপুর থানার সাবেক ওসি হুমায়ুন কবির, সাবেক ইন্সপেক্টর (তদন্ত) বুলবুল ইসলাম এবং ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ সেলিম।
মামলা সূত্র জানায়, নিহত শফিউর রহমান জ্যোতি বগুড়ার ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের প্রতাব খাদুলী গ্রামের মৃত মোজাফফর রহমানের ছেলে। তিনি ধুনট উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
বগুড়া-৫ আসনের সাবেক এমপি হাবিবর রহমান গত ২০১৯ সালে বিএনপি নেতা জ্যোতিকে আওয়ামী লীগে যোগদান করতে বলেন; কিন্তু বিএনপি নেতা জ্যোতি এতে রাজি না হওয়ায় সাবেক এমপি তার ওপর ক্ষুব্ধ হন। একপর্যায়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা অনুসারে, গত ২০১৯ সালের ২৭ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে বগুড়ার শেরপুরের মথুরাপুর-চান্দাইকোনা সড়কের চারমাথা থেকে শফিউর রহমান জ্যোতিকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরিবারের সদস্যরা শেরপুর থানা ও বগুড়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে খোঁজ করেও তার সন্ধান পাননি। এ অবস্থায় বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, ৩০ এপ্রিল রাতে জ্যোতিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
৩ মে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে তার ময়নাতদন্ত শেষ হয়। এরপর লাশ বাড়িতে এনে দাফন করা হয়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, সেই সময় থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। এখন রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন হওয়ায় আদালতে মামলা করা হয়েছে।
ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম জানান, আদালতে এমন মামলার কথা বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি। তবে সোমবার বিকাল পর্যন্ত গত এক সপ্তাহে কোনো কাগজপত্র হাতে পাওয়া যায়নি।
সেই সময় বগুড়া পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) বলেছিলেন, শফিউর রহমান জ্যোতি নিষিদ্ধ ঘোষিত সর্বহারা পার্টির আঞ্চলিক নেতা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় পাঁচটি হত্যাসহ ১৩টি মামলা রয়েছে।
শেরপুর-ধুনট সড়কের বোয়ালকান্দি ব্রিজের কাছে বন্দুকযুদ্ধে শফিউর রহমান জ্যোতি গুলিবিদ্ধ হন। তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থলে একটি ওয়ান শুটারগান, তিন রাউন্ড গুলি, একটা রামদা ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।