পুলিশের গুলিতে চোখ হারানো
মদনে চিকিৎসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় বারেকের পরিবার

মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:০৩ পিএম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে চোখ হারানো আব্দুল বারেকের (৮৪) চিকিৎসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে পরিবার।
আব্দুল বারেক নেত্রকোনার মদন উপজেলার চানগাঁও ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের চকপাড়ার মৃত আব্দুল গণির ছেলে। ঠিকমতো চিকিৎসা না করতে পারলে তার অন্য চোখটিও হারাবেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
মদন উপজেলায় ১৮ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে রাস্তায় নামে ছাত্রসমাজ। একপর্যায়ে পুলিশ ছাত্রদের ওপর গুলি ছোড়ে। এ সময় ২৫-৩০ জন ছাত্র ও সাধারণ মানুষ আহত হয়। আন্দোলনে যোগ দেওয়া নাতি মেহেদীকে খুঁজতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন আব্দুল বারেক।
তাৎক্ষণিক তাকে মদন হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। চিকিৎসক তাকে ২ অক্টোবর নষ্ট হওয়া ডান চোখটি তুলে ফেলার জন্য নির্দেশ দেন। নির্দিষ্ট সময়ে চোখটি না উঠালে বাম চোখটিও নষ্ট হয়ে যাবে বলে জানান। হতদরিদ্র পরিবারটি আব্দুল বারেকের চিকিৎসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
ইতোমধ্যে তার ছেলেরা সহায়-সম্বল বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা তার চিকিৎসা বাবদ খরচ করেছে। বর্তমানে তার চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহে নিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা তাদের নেই। উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কিছু সিভিট ট্যাবলেট আর কয়েকটি চোখের ড্রপ পেলেও আর কোনো মহল থেকে তেমন কোনো সহযোগিতা পাননি খেটে খাওয়া বারেক।
এক মেয়ে ও তিন ছেলের বাবা আব্দুল বারেক। মেয়ে তার স্বামীর সংসার আছে। ছেলেরা বিয়ে করে ভ্যান চালিয়ে নিজের সংসার চালাচ্ছেন। শত প্রতিক‚লতার মাঝেও তারা তাদের বাবার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাবার চোখের অপারেশন করাতে হবে কিন্তু তাদের এখনো টাকা সংগ্রহ হয়নি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মদন উপজেলা শাখার প্রধান সমন্বয়ক রবিউল ইসলাম জানান, ‘পুলিশের গুলিতে আহত ২৭ জনের একটি তালিকা উপজেলা প্রশাসনের কাছে ইতোমধ্যে জমা দিয়েছি। সেখানে আব্দুল বারেকের নাম রয়েছে। উনার চোখের অবস্থা খুবই নাজুক। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে আহবান করছি।’
চানগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি নূরুল আলম তালুকদার জানান, আব্দুল বারেক একজন খেটে খাওয়া মানুষ। চোখে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।