Logo
Logo
×

সারাদেশ

ভৌগোলিক নির্দেশকের পরিচয় পেল মধুপুরের আনারস

Icon

মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৬ পিএম

ভৌগোলিক নির্দেশকের পরিচয় পেল মধুপুরের আনারস

ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইল জেলার ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেল মধুপুরের আনারস। দীর্ঘ ৮ দশকের বেশি সময় পর এ স্বীকৃতি পাওয়ায় সর্বত্র আনন্দের বাতাস বইছে।

সুন্দরবনের মধু ও টাঙ্গাইল শাড়িকে ভারতের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে ঘোষণা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার পর টাঙ্গাইল শাড়ি তার নিজের এলাকার পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।  

মধুপুর গড়াঞ্চলের অন্যতম অর্থকরি ফসল এই আনারসের এমন স্বীকৃতি বহুল ব্যবহারের সুযোগ আর বহু প্রত্যাশিত আন্তর্জাতিক বাজার পাবে বলে অনেকে প্রত্যাশা করছেন। বিদেশে রপ্তানির ক্ষেত্র তৈরি করতে আনারস চাষে হতে হবে সতর্ক ও দায়িত্বশীল, এমন ইঙ্গিত করেছেন কেউ কেউ।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ভৌগোলিক নির্দেশক ইউনিট ২৪ সেপ্টেম্বর মধুপুরের আনারসকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি সনদ দিয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা টের্ডমার্ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মুমিন হাসান স্বাক্ষরিত একটি পত্রে ৩১ শ্রেণিতে জিআই-৫২ নম্বরে মধুপুরের আনারসকে ভৌগোলিক নির্দেশক সনদ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

মধুপুর অঞ্চলে আনারস চাষের গোড়ার ইতিহাস পর্যালোচনায় জানা গেছে, ১৯৪২ সালে আনারস চাষ শুরু হয় উপজেলার ইদিলপুর গ্রামের নৃ-তাত্ত্বিক গারো সম্প্রদায়ের মিজি দয়াময়ী সাংমার হাত ধরে। 

পরিবার সূত্র জানায়, তিনি ভারতের মেঘালয়ের এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে আনারস চাষ ও আনারসের চারা দেখে আগ্রহ হয়। তাই তিনি দেশে ফিরেন বেশ কিছু আনারস চারা নিয়ে। বাড়ির আঙ্গিনায় শুরু করেন আনরস চাষ। সেই থেকে শুরু হয়ে আজ এ আনারস চাষ এলাকা ও দেশকে করেছে সমৃদ্ধ। মধুপুরের আনারসের নিজস্ব ঐতিহ্য রয়েছে। হানিকুইন জায়েন্টকিউ ও জলডুগি আনারসের মিষ্টতা আলাদা। স্বাদ ঘ্রাণও বেশি। মধুপুর গড়াঞ্চলে এখন ৭ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে আনারস চাষ হয়।

কৃষিতে জাতীয় পদক পাওয়া সিআইপি কৃষক গারো বাজারের ছানোয়ার হোসেনের মতে, মধুপুরের আনারস চাষাবাদ বাজার জাতে যতটুকু এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল নানা কারণে আশানুরূপ হচ্ছিল না। ভৌগোলিক নির্দেশক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় একটা আশার জায়গা তৈরি হলো। আন্তর্জাতিক বাজার ধরে বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে আনারস চাষে পরিবর্তন আনতে হবে। আমাদের আনারসের নতুন পরিচয় মধুপুরকেও অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলেও তার আশাবাদ।

মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাকুরা নাম্মী বলেন, জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া মানে ভৌগোলিক নির্দেশক। আনারস মধুপুর ছাড়াও সিলেট, পার্বত্য এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে জন্মে থাকে। এখন আনারস মানে দেশে এবং দেশের বাইরে মধুপুরের আনারস হিসেবে পরিচিতি পাবে। 

মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে দেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের জিআই স্বীকৃতি লাভ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মধুপুরের আনারসের জিআই জার্নালের জন্য অনুমোদিত হওয়াটা মধুপুরবাসীর জন্য অত্যন্ত আনন্দ ও গর্বের একটি ঘটনা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম