খৈয়াছরা ঝর্ণায় পাথর পড়ে ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু
মীরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:০০ এএম
চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের খৈয়াছরা ঝর্ণায় শুক্রবার গোসল করার সময় উপর থেকে পাথর পড়ে মাহবুব হাসান (২৭) নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তারই সহকর্মী গাজী আহমেদ বিন শামস।
জানা গেছে, ঢাকা থেকে মীরসরাইয়ের খৈয়াছরায় বেড়াতে আসেন ওয়ান ব্যাংকের কাওরানবাজার প্রধান কার্যালয়ের সাপোর্ট অফিসার মাহবুব হাসান, গাজী আহমেদ বিন শামস, ফাহিম কবির তুষার, শাহীন ও মেহেদী হাসান নুর।
তুষার জানান, তারা সকাল থেকেই ঝর্ণায় গোসল করাসহ আনন্দ করছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে ঝর্ণার যেখানটায় পানি গড়িয়ে পড়ে সেখানেই অবস্থান করছিলেন তারা। হঠাৎ ঝর্ণার উপর থেকে ২০-২৫ কেজি ওজনের বড় বড় কয়েকটি পাথর এসে তাদের পাশেই বিকট শব্দে আছড়ে পড়ে। তখন তুষার দেখলেন, তার সহকর্মী মাহবুব হাসান সেখানে নেই। পানি থেকে রক্ত ভেসে উঠছে। তাকে খুঁজতে একটা পাথর সরিয়ে দেখেন, রক্তাক্ত হয়ে নিথর হয়ে আছে মাহবুব। আরেক সহকর্মী গাজী আহমেদ বিন শামস আরেকটি পাথরের আঘাতে আহত হয়েছে। তাদেরকে মীরসরাই সদরের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে মাহবুবকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। আর গুরুতর আহত শামসকে তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শামস হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ঘটনার তদন্তে নিয়োজিত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) সালেহ উদ্দিন জানান, সন্ধ্যায় নিহত মাহবুবের স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। চাচা রাশেদুল হাসান জুয়েল জানান, মাহবুবের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়। সে ঢাকার শনির আখড়ায় মা ও ছোট বোনকে নিয়ে থাকতেন।
এ বিষয়ে মীরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের বলেন, খৈয়াছরা ঝর্ণা ইতোমধ্যে অনেক দর্শনার্থীর প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এখানকার ঝর্ণাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত দর্শনার্থী প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, এবারের দুর্ঘটনাটি সত্যি উদ্বেগজনক। ঝর্ণাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
উল্লেখ্য, মীরসরাইয়ের কয়েকটি ঝর্ণা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এসব ঝর্ণায় গোসল করতে গিয়ে গত ১০ বছরে অন্তত অর্ধশত পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনা ঘটলে নানা উদ্যোগের কথা উঠে। পরে সবাই তা বেমালুম ভুলে যায়।