Logo
Logo
×

সারাদেশ

বেরোবির উপহারের বাস উধাও

Icon

রংপুর ব্যুরো

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:২৬ এএম

বেরোবির উপহারের বাস উধাও

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবহৃত একটি বাস উধাও হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ক্যাম্পাসে কয়েকমাস ধরে উপহারের ওই বাসটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা ও গাড়িচালক বাসটি বিক্রি করে টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন।

অভিযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়য়ের উপাচার্যের দপ্তরের পিএ টু ভিসি (সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা) আবুল কালাম আজাদ ও গাড়ী চালক আরিফ হোসেন কৌশলে বাসটি বিক্রি করেছেন।

এই বাস বিক্রির কৌশল হিসেবে অভিনব নাটক সাজিয়েছেন অভিযুক্ত দুজন। বাসটির উপহার দিয়েছিলেন প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার ভ্রাতুষ্পুত্র এ কে এম ছায়াদত হোসেন বকুল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের নথিপত্রে দেখা যায়- উপাহার দাতা বাসটি ফেরত চেয়ে আবেদন করেছেন। ওই আবেদনপত্র পরীক্ষা করে দেখা যায় উপহার দাতার নাম স্বাক্ষর জাল করে ওই আবেদন করা হয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ পুল সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ১২ মার্চ, পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে একেএম ছায়াদত হোসেন বকুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য ৫২ সিটের একটি বাস উপহার দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তাসহ গাড়িচালক কৌশলে বাস উপহার দাতা একেএম ছায়াদত হোসেন বকুলের স্বাক্ষর জাল করে উপাচার্যকে বাস ফেরত দিতে বাধ্য করেন। এরপর তারা বাসটি বিক্রি করে নিজেদের মধ্যে টাকা ভাগাভাগি করে নেন বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাসটি নষ্ট হওয়ায় কয়েক বছর ধরে পরিবহণ পুলে পরিত্যক্ত ছিল। পরবর্তীতে বাসটি মেরামতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে বাজেট চায়।

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাসের কোনো কাগজপত্র দেখাতে না পারাই মন্ত্রণালয় বাজেট দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলের এক কর্মকর্তা এবং এক বাস ড্রাইভার জালিয়াতি করে বাসটি উপাচার্যকে বাস ফেরত দিতে বাধ্য করেন। তারা বাসটি ফেরত নেওয়ার জন্য ৩০ এপ্রিল ছায়াদত হোসেন বকুলের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আবেদনপত্র দেন। ওই আবেদপত্রে তার নাম স্বাক্ষর জাল করা হয়েছিল। কিন্তু সদ্য পদত্যাগকারী উপাচার্য প্রফেসর ড. হাসিবুর রশীদ তা জানতেন না। তিনি উপহারের বাসটি ফেরত প্রদানের অনুমতি দেন এবং রেজিস্ট্রার চিঠি দিয়ে গাড়িটি ফেরত দিতে বলেন।

২১ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের (প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী) স্বাক্ষরে বেরোবি/রেজি/২০২৪/৮১ স্মারকে একেএম ছায়াদত হোসেন বকুলকে পাঠানো এক চিঠিতে বাসটি ফেরত নিতে বলা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাসটি ছায়াদত হোসেন বকুলকে হস্তান্তর করেছেন কিনা তার কোনো প্রকার নথিপত্র দেখাতে পারেনি।

ভিসির পিএ আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি কেন বাস হস্তান্তর চিঠি জমা দিব? আমি জমা দেওয়ার কে? যারা দায়িত্ব ছিলেন তারা জমা দিয়েছেন, এটা তাদের ব্যাপার।

তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তিনি অস্বীকার করে বলেন, আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি তো ওই সেক্টরের কেউ না।

বাস ড্রাইভার আরিফ তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন , আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিবহণ দপ্তরের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার তাপস কুমার গোস্বামী বলেন, বাস ফেরত দেওয়া হয়েছে, কিন্তু আমাদের কাছে হস্তান্তরের কোনো ডকুমেন্টস দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী বলেন, সাবেক উপাচার্য ড. হাসিবুর রশীদের লিখিত অনুমতিক্রমে গাড়ি ফেরতের আদেশ দেওয়া হয়। গাড়িটি রিসিভ করার বিষয়ে পরিবহণ পুল ভালো বলতে পারবে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ওয়াজেদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ছায়াদত হোসেন বকুল সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে ফোন কলে পাওয়া যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ার আত্মগোপনে রয়েছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম