Logo
Logo
×

সারাদেশ

ভুল চিকিৎসায় দৃষ্টি হারালেন মঞ্জু

Icon

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৯ এএম

ভুল চিকিৎসায় দৃষ্টি হারালেন মঞ্জু

চোখে বালু পড়ায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় চোখের দৃষ্টি হারান ঈশ্বরগঞ্জের মঞ্জুরুল হক। ভুক্তভোগী মঞ্জুর অভিযোগ ডাক্তারের এমন ভুল চিকিৎসায় তার বাম চোখটি দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েছে। 

এমন ভুল চিকিৎসায় তার চোখটি নষ্ট করায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও দৃষ্টি ফিরে পাবার জন্য সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত আবেদন করে বিচার প্রার্থী হয়েছেন মঞ্জু। 

মঞ্জু ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের মধ্যপালা গ্রামের দরিদ্র নুরুল ইসলামের পুত্র। সে পিতা-মাতাসহ ৯ সদস্যের পরিবারে একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি। পেশায় সে একজন ইলেকট্রনিক্স মিস্ত্রী। ভুল চিকিৎসায় তার চোখের দৃষ্টি হারানোর কারণে পরিবার পরিজনের রুটি রোজগার আয়ের পথ বন্ধ। সে এখন তার পরিবার পরিজন নিয়ে অসহায় দিনাতিপাত করছে। 

মঞ্জুর বাবা নূরুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তার অভিযোগ আমার স্বর্ণের টুকরা পুতটারে ডাক্তাররা ভুল চিকিৎসা কইরা চোখটা কানা কইরালছে। আমি আজ অসহায়। কি কইরা আইজ পুতের চিকিৎসা করি। কেমনে আমার পরিবারের খাওন যোগাই। তিনি তার পুত্রের চোখ বিনষ্টকারীদের বিচার দাবি করেন। 

জানা যায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে মঞ্জু নশতি বাজারে যাওয়ার পথে তার বাম চোখে বালু পড়ে। চোখ নিয়ে সে অস্বস্তি বোধ করায় পরদিন সে চিকিৎসার জন্য গৌরীপুর উপজেলার নয়াপাড়া বোকাইনগর ডা.মুক্তাদির চক্ষু হাসপাতালে গেলে কর্তব্যরত ডা. মারুফ ওয়াহিদ তার সহযোগীকে নিয়ে চোখ পরিষ্কার করার সময় সুই দিয়ে তার বাম চোখ ছিদ্র করে ফেলে। এ সময় তার আর্তচিৎকারে লোকজন জড়ো হলে চিকিৎসক তড়িঘড়ি করে তার চোখটি ব্যান্ডেজ করে তাকে বিদায় দেয়। 

বাড়িতে আসার পর চোখে প্রচন্ড ব্যথা শুরু হয়। রাত পোহাতেই সে আবার ওই হাসপাতালে গেলে তার ব্যবস্থাপত্রে ঔষধ পরিবর্তন করে দেয় ডাক্তার। কিন্তু এতেও ব্যথা কমেনি। আবারও পরদিন সে ওই হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুক্তাদিরকে চোখ দেখালে তিনি বলেন, তোমার ওই চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। এখনই ওই চোখটি উঠিয়ে ফেলতে হবে, না হয় ডান চোখও নষ্ট হয়ে যাবে। আমার এখানে যদি চিকিৎসা না হয় তাহলে বাংলাদেশের কোথাও চিকিৎসা হবে না! ডাক্তারের এমন কথা শুনে মঞ্জু ও তার বাবা নূরুল ইসলাম হাসপাতালে কান্নায় লুটিয়ে পড়ে হাসপাতাল চত্বরেই অজ্ঞান হয়ে যান।

এসময় ডা. মুক্তাদির চোখের ব্যবস্থাপত্র দিয়ে তাকে বিদায় করে দেন। কিন্তু চোখের ব্যথার যন্ত্রণায় নিরুপায় হয়ে সে চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ চক্ষু হাসপাতাল এন্ড ইনস্টিটিউটের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ও কর্নিয়া কনসালট্যান্ট ডা. মোহাম্মদ আমিরুজ্জামানের কাছে চিকিৎসার জন্য গেলে তিনি জানান, চোখটি ফুটো করে ফেলায় দ্রুত অপারেশন করতে হবে। এতে ভাগ্য ভালো হলে চোখের দৃষ্টি ফিরে আসতে পারে। 

মঞ্জুর অভিযোগের ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. এ.কে.এম.এ. মুকতাদিরের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, চোখে বালু পড়েনি, লোহা পড়েছিল তাই ইনফেকশন হয়েছিল। তিনি দাবি করেন চিকিৎসায় কোন ভুল হয়নি। 

এ ব্যাপারে মঙ্গলবার ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন ডা. নজরুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম